চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জোর করে বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নতুন মিটারে লাগামছাড়া বিল আসছে বলেও অনেকে অভিযোগ তুলেছেন। এবার রাজ্য সরকার ওই স্মার্ট মিটার নিয়ে বড়ো সিদ্ধান্ত নিল। যেখানে বলা হয়েছে, সরকারী প্রতিষ্ঠান বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বাইরে আপাতত কোনো বাড়িতে স্মার্ট মিটার লাগানো হবে না।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই এই স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। এই মিটারগুলি বিদ্যুৎ খরচ, ভোল্টেজ লেভেল ইত্যাদি রেকর্ড করে সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার কন্ট্রোল রুমে পাঠাতে সক্ষম। এমনকি, এই মিটারগুলি প্রিপেইড পদ্ধতিতে কাজ করে, অর্থাৎ আগাম টাকা জমা দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হয়। রিচার্জ শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জানা গিয়েছে, উত্তর চব্বিশ পরগণার বারাসাতের চাঁপাডালি মোড়ে এই স্মার্ট মিটার নিয়ে ওঠা অভিযোগ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে চলে যায়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যুৎ দপ্তরকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দেন। আজ রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের দেওয়া নোটিশে জানানো হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে একাধিক বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছিল, তবে বিদ্যুৎ দপ্তরে বেশ কিছু অভিযোগ আসায় আপাতত ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হচ্ছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
উল্লেখ্য, এদিন হুগলীর রবীন্দ্রনগর কালীতলার বাসিন্দারা স্মার্ট মিটারের অস্বাভাবিক বিল নিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরে বিক্ষোভ দেখান। আর দাবী করেন, “জোর করে ওই মিটার বসিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়েছে, আর তারপরই লাফিয়ে বিল বেড়েছে।” আবার সম্প্রতি ব্যান্ডেলের এক পরিবারও একই অভিযোগ তুলেছিল। একমাসে বারো হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ তুলেছিল। অতএব, পরপর এমন অভিযোগ উঠতে থাকায় বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে গৃহস্থের বাড়িতে স্মার্ট মিটার লাগানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে প্রায় এক লক্ষ ষাট হাজার স্মার্ট মিটার গোটা বাংলা জুড়ে লাগানো হয়েছিল। যার মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশই গৃহস্থ বাড়িতে লাগানো হয়। আর বাকি ৩৫ শতাংশ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বসানো হয়েছিল। এখন প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী সবক’টি রাজ্যকে স্মার্ট মিটার বসানোর জন্য স্বল্প সময় বেঁধে দিয়েছেন। এখন রাজ্য এই ব্যাপারে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here