শোকজ হলো আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়া

Share

অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ এবার রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়াকে এবার শোকজ করলো। পিজিটি (পোস্ট গ্যাজুয়েট ট্রেনি) হয়েও ইএনটি সার্জনের পরিচয় দিয়ে আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠেছে। তাকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে আজ বিধাননগর পুলিশ আসফাকুল্লার কাকদ্বীপের বাড়িতে হানাও দিয়েছে। আসফাকুল্লা এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘ভয় দেখানোর জন্যই এসব করা হচ্ছে। প্রথমে সই-তারিখ ও রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের নোটিশ। এরপর বাড়িতে পুলিশের তল্লাশি।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের রামতনু নগর এলাকায় আসফাকুল্লার বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে বিধাননগর পুলিশের একটি দল যায়। বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করে নিয়ে যায় তারা। আসফাকুল্লার পরিবারের দাবি, কোনও রকম নোটিস না-দিয়েই এসেছিল পুলিশ। কেন তারা এসেছিল, সে বিষয়েও তাদের কিছু জানানো হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে আসফাকুল্লা সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োবার্তায় বলেন, ‘‘যে হেতু আরজি কর আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তাই পুলিশ প্রশাসন আমাকে ভয় দেখাচ্ছে।’’


আসফাকুল্লার দাদা অলিউল্লাহ নাইয়া বলেন, ‘‘বিধাননগর থানার পুলিশ এসে কিছু নথিপত্র নিয়ে গিয়েছে এবং একটা নোটিসও দিয়ে গিয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু বলেনি।’’ সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘সুন্দরবন পুলিশ জেলার কোনও পুলিশ ওঁর বাড়িতে যায়নি। বিধাননগরের পুলিশ গিয়েছিল।’’ আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ তুলেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। তারা অভিযোগ করেছিল, সিঙ্গুরে একটি স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সংস্থার বিজ্ঞাপনে আসফাকুল্লা নিজেকে ‘এমএস’ বলে দাবি করেছে, যা নিয়ম-বহির্ভূত।


তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও একই অভিযোগ করেছিলেন গত ১০ ডিসেম্বর। ফেসবুক পোস্টে সেই বিজ্ঞাপনের একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তলায় সুলভ মূল্যে ফিজিওথেরাপি লেখা আছে। কিন্তু বিনামূল্যে চিকিৎসাটা লিখতে ভুলে গিয়েছে। এ বার থেকে ওখানে যাঁরা যাবেন, কেউ এক পয়সাও দেবেন না।’’ বিতর্ক তখন থেকেই। প্রশ্ন উঠেছিল, কোর্স শেষ হওয়ার আগে আসফাকুল্লা কোন যুক্তিতে নিজের পরিচয়ে ‘এমএস’ লিখতে পারেন? এ বার আসফাকুল্লাকে নোটিস ধরিয়ে সেই বিষয়টি জানতে চাইল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।


নোটিশে এও বলা হয়েছে, যথাযথ জবাব না মিললে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হতে পারে। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল সূত্রে খবর, অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আসফাকুল্লার ডাক্তারি ডিগ্রিও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। ওই সূত্রই জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের দুই আধিকারিক আসফাকুল্লা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন নিয়ে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরে এসেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছেও ওই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই ব্যাপারেই তাঁরা খোঁজখবর করতে এসেছেন। পুলিশকে সেই সব তথ্য দেওয়া হয়। এর পরেই বুধবার আসফাকুল্লাকে নোটিস ধরায় কাউন্সিল।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031