পড়ানোর নাম করে দিনের পর দিন ছাত্রীর উপর চলত যৌন হেনস্থা

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ শিলিগুড়ি পুরসভার মিলনপল্লি এলাকায় নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে। এমনকি ঘটনার কথা কাউকে জানালে প্রাণে মারার হুমকিও দিতেন। ভয়ে ওই কিশোরী এত দিন কাউকে কিছু বলেনি।

কিশোরীর মা বলেন, ‘‘ইদানীং মেয়ে পড়তে যেতে চাইত না। নানা রকম অজুহাত দিত। আমরা ওকে জোর করেই পড়তে পাঠাতাম। কিন্তু গত সপ্তাহে মেয়ে কিছুতেই পড়তে যেতে না চাওয়ায় আমি বকাঝকা করতেই ও কাঁদতে কাঁদতে সব সব ঘটনা জানায়। আর যৌন হেনস্থার কথা যাতে বাইরে না আসে তার জন্য মেয়েকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।’’  


চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটছে। কিশোরীর পরিবারের দাবী, ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই মেয়ে অশোকনগরের বাসিন্দা বিধায়কচন্দ্র দাস নামের ওই গৃহশিক্ষকের কাছে অঙ্ক শিখতে যেত। এছাড়া মা বলে সম্বোধনও করত কিন্তু তারপরও এই ধরণের ঘটনা ঘটানো সত্যি অস্বাভাবিক।  


এরপর কিশোরীর পরিবার বিধায়কচন্দ্রের বাড়িতে গেলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে চাপে পড়ে সব স্বীকার করে নেন। আর স্বীকারোক্তির প্রমাণ হিসাবে পুরো কথোপকথনের রেকর্ডিং তাদের মোবাইলে রেখেও দিয়েছেন। তবে এই ঘটনা জানাজানি হলে মেয়ের বদনাম হতে পারে এই ভয় দেখিয়ে সে ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। 


কিন্তু কিশোরীর পরিবার এই প্রস্তাব মেনে না নিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বিধায়কচন্দ্র পরিবার নিয়ে চম্পট দেন। জানা গিয়েছে, তিনি এলাকার পরিচিত সিপিএম নেতা। গত পুর নির্বাচনেও দলের হয়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটেও লড়েছিলেন।  

নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘যারা সমাজ গড়ার কারিগর, যদি তারাই এমন ঘটনা ঘটান তাহলে মানুষ কাকে ভরসা করবে? আজ আমার মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে, কাল অন্য মেয়ের সাথেও ঘটতে পারে। প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।’’  

এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই এলাকাবাসীর একাংশ বিধায়কচন্দ্রের বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনেন। তাছাড়া আশ্বাস দেওয়া হয় যে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করা হয়েছে।  

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031