নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁকুড়াঃ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ রাজনৈতিক মহলের জল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে। কখনো প্রকাশ্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ভোট কৌশলের প্রশংসা করেছেন, আবার কখনো রাজ্যে বিজেপির খারাপ ফলের জন্য বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়ার ওন্দার প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা ভবতারণ চক্রবর্তীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে নিজেই আরো জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন।
সৌমিত্র খাঁ ওন্দা ব্লকের রতনপুরে সাংসদ উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে রতনপুর বাজারে ভবতারণ চক্রবর্তীকে দেখতে পেয়ে তৎক্ষণাৎ গাড়ি থেকে নেমে ভবতারণ চক্রবর্তীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। তিনিও তাঁকে আশীর্বাদ করেন। এরপর কিছুক্ষণ সৌমিত্র খাঁ ও ভবতারণ চক্রবর্তীর মধ্যে কুশল বিনিময় চলে। সূত্রের খবর, সৌমিত্র খাঁ পর পর তিন বার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় পর এবার কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। আর তাই ঘনিষ্ঠদের দাবী, ‘‘শেষ অবধি মন্ত্রীত্ব না পাওয়ায় সৌমিত্র খাঁ কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ।’’
সৌমিত্র খাঁ অবশ্য এই ঘটনার সাথে রাজনীতির জল্পনা উড়িয়ে দাবী করে জানান, ‘‘রাজনৈতিক দল আলাদা হতে পারে, কিন্তু আমি সব সময় রাজনৈতিক সৌজন্যে বিশ্বাসী। আমি তৃণমূলে থাকাকালীন ভবতারণ চক্রবর্তী আমার নেতা ছিলেন। তাঁর সাথে আমার দেখা হলো। তাই পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিলাম। এর সাথে রাজনীতির কোনো যোগ নেই।’’ ভবতারণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এক সময় আমি ওন্দায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলাম। বাঁকুড়া জেলা এবং রাজ্যের দায়িত্বপূর্ণ পদেও ছিলাম। সে সময় সৌমিত্র খাঁ আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মী ও সাংসদ ছিলেন। সেই সূত্রেই আমাকে প্রণাম করেছেন। আমিও তাঁকে আশীর্বাদ করেছি।’’
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যন তথা বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সৌমিত্র খাঁ অনেক ভেলকি জানেন। নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে বাপবাপান্ত করে এখন তৃণমূলের নেতাদের সাথে ঢলাঢলি শুরু করেছেন। আমার ধারণা, কেন্দ্রের মন্ত্রীত্ব না পেয়ে নিজের দলকে বার্তা দিতেই এই কাণ্ড করছেন। আর সৌমিত্র খাঁ ফের তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কি না, তা সময় এলে জানা যাবে।’’