নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ বর্ষায় রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাছ। একজন ব্যক্তি দু’হাতে দুটো কাতলা মাছ নিয়ে দৌড়চ্ছেন। আর এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনৈতিক তরজা বেড়েছে। কারণ, ভিডিয়োতে যাকে কাতলা মাছ নিয়ে দৌড়াতে দেখা যাচ্ছে, তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিরোধী নেতা বামদেব গুছাইত। বিজেপি এই নেতার মাছ কুড়িয়ে দৌড় লাগানো নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, গাড়ি উল্টে মাছগুলি রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পর চালক কিংবা খালাসিকে উদ্ধার না করে মাছ চুরি করে দৌড়ে পালাচ্ছেন বিজেপি নেতা। মাছ কুড়িয়ে দৌড় লাগানোর কথা অস্বীকার করেননি বামদেব গুছাইত। তবে তিনি বলেন, গাড়ির চালকের পরামর্শেই মাছ কুড়িয়েছিলেন।
ভিডিয়োটি বছর চারেকের পুরনো বলে জানা গিয়েছে। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুমিত সামন্ত গতকাল ওই ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। সুমিন সামন্ত বলেন, কোলাঘাট-হলদিয়া জাতীয় সড়কে মেচেদার শান্তিপুরে প্রবল বৃষ্টি চলাকালীন উল্টে গিয়েছিল মাছের গাড়িটি। রাস্তায় ইতস্তত ছড়িয়ে পড়ে প্রচুর মাছ। গাড়ির চালক এবং খালাসি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন।
সুমিত সামন্তের অভিযোগ, “চালক কিংবা খালাসিকে উদ্ধার না করে মাছ কুড়োতে ব্যস্ত ছিলেন বিজেপি নেতা। দুটো কাতলা মাছ নিয়ে দৌড় দিয়েছিলেন। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে কীভাবে এতটা অমানবিক হতে পারেন? এটা বিজেপির চরিত্র। আরও অনেক তথ্য রয়েছে। আগামী দিনে দেখতে পাবেন, আরও কত তথ্য প্রকাশ পায়।” মাছ কুড়োনোর কথা অস্বীকার করেননি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইত। তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “গতকাল এখানে তৃণমূল একটি সভা করেছিল। জেলার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। তারপরও সভায় লোক হয়নি। বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরে তৃণমূল আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। চার বছর আগে আমি যখন জনপ্রতিনিধি ছিলাম না, সেই সময়ের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
মেচেদা বাজারে একটি মাছ ভর্তি গাড়ি উল্টে গিয়েছিল। মাছগুলি জাতীয় সড়কে পড়ে যায়। সেইসময় সাধারণ মানুষ মাছগুলি কুড়োচ্ছিলেন। আমি মোটরবাইকে একটি রাজনৈতিক সভা করতে যাচ্ছিলাম। আমি দেখলাম, গাড়িটিকে রাস্তা থেকে না তুলে সবাই মাছ কুড়োচ্ছেন। আমি স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে গাড়িকে তুলে রাস্তার ধারে সরিয়ে রাখি। মানুষের যাতায়াতের সুবিধা করে দিই। সেইসময় ওই গাড়ির চালকের পরামর্শে দুটি মাছ কুড়োই। ওই সময় বৃষ্টি হচ্ছিল বলেই ছুটেছিলাম। তার মানে এই নয় যে আমি মাছ চুরি করছিলাম। আমি এত নিঃস্ব হয়ে যাইনি যে আমাকে চুরি করে জীবনযাপন করতে কবে।”
তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে এই কথা কারা বলছে? যারা চিহ্নিত চোর। যারা প্রতিষ্ঠিত চোর। ওই ভিডিয়ো দেখিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রচারও করেছিল। তৃণমূলের যারা এই ভিডিয়ো দেখিয়ে প্রচার করেছিল, তারা হেরেছে। আমি জিতেছি। তৃণমূল কংগ্রেস কতটা দেউলিয়াপনা হয়ে গিয়েছে যে চার বছর আগের ভিডিয়ো দেখিয়ে কুৎসা করছে। তবে এতে আমি খুশি। আমার প্রচার হয়ে যাচ্ছে। ছাব্বিশের নির্বাচনের পর ওদের মিষ্টিমুখ করাব।”
Sponsored Ads
Display Your Ads Here