মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলার অভিযোগকে ঘিরে উত্তাল রাজ্য
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ গতকাল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের ২নং ব্লকের বিরুলিয়া বাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার অভিযোগকে ঘিরে পুনরায় আজ সকাল থেকেই ওই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “তাঁকে চার-পাঁচজন যুবক পরিকল্পনামাফিক ধাক্কা দেয়। এরফলে তাঁর পায়ে আঘাত লাগায় রাতে কলকাতায় ফিরে এসে এসএসকেএমে ভর্তি হয়েছেন”।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে আজ সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভু গোয়েল ও পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার জন্য সেখানে উপস্থিত হলে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পনামাফিক মুখ্যমন্ত্রীকে আঘাত করার অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ান। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা এবং মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান জানান, ”বিজেপি বরাবরই ষড়যন্ত্র করে। মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর পর বিজেপি পায়ের তলায় মাটি পায়নি। তাই দলনেত্রীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জা্নাচ্ছি”।
কিন্তু বিজেপি পুরো বিষয়টি সাজানো বলে অভিযোগ তোলেন।স্থানীয় এক বিজেপি কর্মী প্রলয়ের দাবী, “বিরুলিয়া বাজারের ওপর দিয়ে যে ঢালাই রাস্তা গেছে, সেখানে প্রায় বছর দুয়েক আগে রাস্তার দু’পাশে দু’টি লোহার খুঁটি পোঁতা হয়েছিল। কারণ ভারী মালবাহী ভ্যান অথবা কোনো ভারী গাড়ি ওই রাস্তায় না ঢোকে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি থেকে নামার সময় সেই খুঁটি না দেখতে পেয়েই তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। এর সঙ্গে হামলার কোনো যোগ নেই”।
তিনি আরো বলেন, ”শুভেন্দুর নেতৃত্বে গোটা নন্দীগ্রামে যেভাবে বিজেপি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে এইবার মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে বিপুল ভোটে হারবেন। এ ভাবে মিথ্যে হামলার অভিযোগ তুলে মানুষের কাছ থেকে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে। এই ঘটনার ফলে নন্দীগ্রামের মানুষ তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন”।
যার জেরে তৃণমূল-বিজেপি কর্মীরা একে অপরের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের ধস্তাধস্তিও চলে।
এছাড়াও আজ সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্তে মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ চলছে। কোথাও পথ অবরোধ চলছে। কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। এমনকি একাধিক স্টেশনে ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা।