বাবার ছিন্নভিন্ন দেহ ছেলেকে দিয়ে তোলাল পুলিশ

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় দুর্ঘটনায় বাবার দেহ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ এই ঘটনায় এক অমানবিকতার পরিচয় দিল। এই ঘটনায় পুলিশ শোকার্ত ছেলেকে দিয়ে ওই দেহাংশ তোলাল। এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হওয়া এক বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার করার সময় এই ঘটনা ঘটে৷ সোমবার রাত আটটা নাগাদ গুসকরা বাস টার্মিনাসের কাছে ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় প্রদীপ কুমার দাস (৬৩) নামে এক বৃদ্ধের।তিনি পেশায় লটারির টিকিট বিক্রেতা ছিলেন। তাঁর বাড়ি গুসকরা পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শিরিষতলায়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন বৃদ্ধের ছেলে সুদীপ দাস। দুর্ঘটনাস্থলে যায় গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। মৃতের ছেলে জানান, ঝড় বৃষ্টির পর বাবা রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে  বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময়ে পিছন দিক থেকে একটি ডাম্পার ধাক্কা মারে। বাবা ডাম্পারের নীচে পড়ে গেলে শরীরের উপর দিয়ে ডাম্পারের চাকা চলে যায়। দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।


ওই যুবকের আরও অভিযোগ, পুলিশ আমাকে  রাস্তায় ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে পড়ে থাকা বাবার দেহের টুকরো তুলতে বলে। আমি দেহাংশ রাস্তা থেকে তুলে দিই। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রদীপকুমার দাসের নিজস্ব কোনও দোকান ছিল না। তিনি গুসকরা শহরে ঘুরে ঘুরে লটারির টিকিট বিক্রি করতেন। তিনি সারাদিনে তিনবার টিকিট বিক্রি করতেন শহরের বিভিন্ন জায়গায়।

সদ্য পিতৃহারা ছেলেকে দিয়ে পুলিশ বাবার দেহাংশ তোলাল কিভাবে? তা কেউ ভাবতে পারছেন না। এলাকাবাসীদের কথায়, ‘‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু হয়েছে। তখন পুলিশের শোকে ভারাক্রান্ত সন্তানকে সান্ত্বনা দেওয়া উচিত ছিল। চোখের সামনে বাবার বীভৎস পরিণতি দেখে ওই যুবক যাতে পিতৃশোকে মানসিক বা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে না পড়েন, তা দেখা উচিত ছিল।


আর তা না করে ছেলেকে বাবার দেহাংশ তুলতে বলল।’’ এই ঘটনার ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাসের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানান, ‘‘ঠিক কি ঘটেছে তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930