বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজের মহিলা হস্টেল চত্বরে অচেনা অনুপ্রবেশকারীকে ঘিরে তৈরী হয়েছে আতঙ্ক

Share

চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহেই মহিলা হস্টেলে অচেনা ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ঘিরে আতঙ্ক ছড়াল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত পড়ুয়ারা হাসপাতালের সুপারকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহিলা হস্টেলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। আচমকাই মহিলা হস্টেল চত্বরে অপরিচিত এক ব্যক্তিকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখেন এক আবাসিক চিকিৎসক ছাত্রী। তার পরই ওই পড়ুয়া টেলিফোনে বিষয়টি জানান হস্টেলের মূল ফটকে থাকা নিরাপত্তারক্ষী এবং হাসপাতালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়কে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পড়ুয়ার দাবি, নিরাপত্তারক্ষী খোঁজ শুরু করতেই ওই ব্যক্তি গা-ঢাকা দেন হস্টেল চত্বরের পিছন দিকে থাকা ঝোপঝাড়ের মধ্যে। তার পর হস্টেলের দেওয়াল টপকে ফের ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান বলে অভিযোগ।


ডাক্তারির পড়ুয়া অন্তর্লীনা হালদার এই প্রসঙ্গে বলেন, “ভোর ৩টে বাজতে তখন ১০ মিনিট বাকি। আমি হস্টেলের এক বিল্ডিং থেকে অপর বিল্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি হস্টেল চত্বরেই এক ব্যক্তি আপাদমস্তক কালো জামাকাপড় পরে এবং মুখে কালো কাপড় বেঁধে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “ওই ব্যক্তির হাতে কিছু একটা ছিল। আমাকে দেখেই ওই ব্যক্তি আমার দিকে তেড়ে আসেন। আমি ভয়ে হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীকে ডাকাডাকি করি। তার পরই ওই ব্যক্তি প্রথমে হস্টেলের পিছন দিকে দৌড়ে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়েন।


পরে সম্ভবত পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান। আমার ধারণা ওই ব্যক্তি শুধু চুরি করার জন্য হস্টেলে আসেননি। তাঁর অন্য কোনও বদ অভিসন্ধি ছিল।” হস্টেলের আর এক আবাসিক সুকন্যা মিত্রের কথায়, “চিকিৎসা করার প্রয়োজনে রাতে আমাদের হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। তাই আমাদের হস্টেলের অধিকাংশ ঘরই খোলা থাকে। এই ভাবে যদি কোনও দুষ্কৃতী আমাদের হস্টেল চত্বর পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন, তা হলে বড় বিপদ হতে দেরি হবে না। আশা করি কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।”


বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় হস্টেলের নিরাপত্তা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “হস্টেলের আবাসিকেরা আমায় টেলিফোনে বিষয়টি জানান। ওই ব্যক্তি কে বা তাঁর কী উদ্দেশ্য ছিল, তা স্পষ্ট নয়। ঘটনার খবর পাওয়ার পর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের গাড়ি ওই এলাকায় টহল দেওয়া শুরু করে।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “মঙ্গলবার থেকেই থেকে পুলিশি টহল আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মহিলা হস্টেলের পিছনের পাঁচিল টপকে কেউ ভিতরে ঢুকে পড়তে পারন, এই বিষয়টি আমাদের মাথাতেই আসেনি। তাই দ্রুত পিছনের পাঁচিলের উপর কাঁটাতার বসানোর কথা বলা হয়েছে। হস্টেলের পিছন দিকে নজরদারি চালাতে দু’টি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।”

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
August 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031