অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ এবার রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু) জামিন পেলেন। ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কলকাতার বিচার ভবন জামিন দিল। গ্রেফতারীর চোদ্দ মাস পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেতে চলেছেন তিনি। গ্রেফতারির সময় বালু ছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি খাদ্য দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। নির্বাচনের পর যে সরকার তৈরি হয়েছিল, সেই সরকারে বালু ছিলেন বনমন্ত্রী।
আদালত সূত্রে খবর, ২৫ হাজার টাকার জোড়া বন্ড এবং ৫০ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে। বুধবারই বালুর জেলমুক্তি ঘটবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সমস্ত নিয়ম মেনে আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপি জেলে গেলে জেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের প্রক্রিয়া শুরু করবেন। সবটা সময়ের মধ্যে হলে বুধবারই জেল থেকে ছাড়া পেতে পারেন প্রাক্তন মন্ত্রী। এর আগে জামিনের শুনানিতে প্রাক্তন মন্ত্রীকে দুর্নীতির ‘রিং মাস্টার’ বলে বর্ণনা করেছিল ইডি।
ইডি দাবি করেছিল, জ্যোতিপ্রিয় ‘দুর্নীতির গঙ্গাসাগর’। রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বালুর জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে ইডির বক্তব্য ছিল, রেশন দুর্নীতির এফআইআরে প্রথমে তাঁর নাম ছিল না। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক নথি ইডির হাতে এসেছে। তা থেকে দেখা গিয়েছে, এফআইআরে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর নাম না থাকলেও এই দুর্নীতির ‘রিং মাস্টার’ তিনিই। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতারির পরে প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী।
হাসপাতালে কিছু দিন থাকতে হয় তাঁকে। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে জেলে যান তিনি। সেই থেকে জেলেই ছিলেন। বেশ কয়েক বার আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। কিন্তু প্রতি বার ‘প্রভাবশালী তত্ত্ব’ তুলে ধরে তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেছিল ইডি। তাদের দাবি ছিল, জ্যোতিপ্রিয়কে জামিন দিলে তিনি তদন্তে প্রভাব খাটাতে পারেন। অতঃপর জামিন পাননি প্রাক্তন মন্ত্রী। বুধবার অবশ্য তা ঘটেনি। দুর্গাপুজোর আবহে বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশির পর রাতে বালুকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, মন্ত্রীর বাড়ি থেকে রেশন বণ্টন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র মিলেছে। জেলবন্দির পর অসুস্থতার কারণে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন। তবে পরে সুস্থ হয়ে ফের জেলে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতারের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, ‘‘বিজেপি ষড়যন্ত্র করেই বনমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে।’’