নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার নিধিরামপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে থাকা একটি বটগাছের ডাল থেকে উদ্ধার শুভদীপ মিশ্র নামে ১ জন বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনায় প্রকৃত তদন্তের দাবী তুলে এলাকাবাসীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পাঁচ ঘণ্টা ধরে দেহ আটকে বিক্ষোভ চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুভদীপ ওরফে দীপু বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। বিপদ-আপদে সবসময় পাশে থাকেন। কিন্তু এক সপ্তাহ থেকে খোঁজ ছিল না। অভিযোগ ওঠে, ওই বিজেপি কর্মীর সঙ্গে প্রতিবেশী এক গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। যা নিয়ে অশান্তি শুরু হয়।
এমনকি শুভদীপকে ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি ও বাপের বাড়ির তরফে খুনের হুমকি দেওয়ায় শুভদীপ বাড়ি ছাড়েন। মৃত বিজেপি কর্মীর আত্মীয় সৌমেন দুবে জানান, ‘‘দীপুকে খুন করা হয়েছে। প্রতিবেশী মহিলার পরিবারের পক্ষ থেকে বহু বার খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এবার তারাই মেরে ফেলেছে। আমরা তাদের প্রত্যেকের কঠোর শাস্তি চাই।’’
দোষীদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করার দাবী তুলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রতিবেশী ওই মহিলার বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এদিকে পুলিশ ওই মহিলা সহ পরিবারের তিন জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা প্রথমে বাধা দেন। শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি এবং তৃণমূলের গঙ্গাজলঘাটি দুই নম্বর সাংগঠনিক ব্লকের সভাপতি নিমাই মাজি খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে যান।
এরপর চন্দনা বাউরি বলেন, ‘‘পরিবারের দাবি, দীপুকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্তে ঢিলেমি করছে। এতেই পরিষ্কার যে এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কারণ থাকলেও থাকতে পারে।’’ পরে পুলিশ মৃতের গলা থেকে ফাঁস খুলে দেহ গাড়িতে চাপিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই বিধায়ক পুলিশের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন।
তারপর পুলিশ পাঁজাকোলা করে সরিয়ে দিলে চন্দনা বাউরি অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে। আমি তদন্তের দাবী জানালে আমাকেও হেনস্থা করেছে। রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। আমরা তদন্তের দাবী থেকে নড়ছি না। এরপর আমরা গঙ্গাজলঘাটি থানা ঘেরাও করব। প্রয়োজনে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখব।’’
অন্য দিকে, নিমাই মাজি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা আত্মহত্যা কি না, তা তো তদন্তেই বোঝা যাবে। পারিবারিক কারণেই এই ঘটনা বলে আমার ধারণা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’’