ওয়েব ডেস্কঃ শহরের শপিংমলগুলিতে হামেশাই দেখা যায় বিদেশি ও বিদেশিনীদের। শপিংমলের বিপণিতে কিছু কেনার উদ্দেশ্যে আসলেই কাউন্টারে থাকা ক্যাশিয়ারকে ক্যাশ গুনতে দেখামাত্রই বলে, ‘ভারতীয় নোটগুলি একেবারে বিদেশি ডলারের মতো দেখতে। তাই নোটগুলি দেখবার নাম করে ক্যাশিয়ারকে অন্যমনস্ক করে নগদ টাকা লুঠ করে পালাচ্ছে বিদেশি যুগল। এই বিদেশি যুগলের দাপটে ঘুম ছুটেছে শপিং মলের কর্মীদের।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি শহরের শপিংমলগুলিতে চুরির ঘটনা ঘটছে। অতিসম্প্রতি পুলিশের কাছে আশা এক অভিযোগ অনুযায়ী, উত্তর কলকাতার ফুলবাগানের এক শপিংমলটি বন্ধ হওয়ার সময় তার একটি দোকানে এসে হাজির হয় এক বিদেশি যুগল। তারা ইংরেজিতে জিজ্ঞাসা করে, তখন তারা কিছু কিনতে পারবে কি না। তখন দু’জনকেই বলে দেওয়া হয় যে দোকান বন্ধ হচ্ছে তাই এখন কেনাকাটা সম্ভব নয়। কিন্তু তারা কথা বলতে বলতে দোকানের ভিতরে ঢুকে যায় ও যে দু’জন ক্যাশিয়ার নগদ টাকা মেলাচ্ছিলেন তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ক্যাশিয়ারদের হাতে থাকা ১০০ ও ৫০০ টাকার নোটের দিকে তাকিয়ে তারা বলেন, টাকাগুলি একেবারে ডলারের মতো দেখতে। এরপর নোটগুলি তাদের থেকে হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তা দেখতে শুরু করে। ভারতীয় নোটগুলি দেখতে খুব সুন্দর, এমন প্রশস্তিবাক্যে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতে বান্ডিলটি ফেরত দিয়ে দোকান থেকে বিদায় নেয় তারা। এরপর টাকা গোনা শেষ হওয়ার পর দুই ক্যাশিয়ার তাদের ক্যাশ থেকে ৪০ হাজার ৫০০ টাকা উধাও দেখে বুঝতে পারেন, কথা বলার ফাঁকেই টাকা হাতিয়েছে বিদেশি যুগল।
দোকানের কত্রীপক্ষ ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ আধিকারীকদের মতে, তাদের মূল টার্গেট শপিংমলের বড় দোকানগুলি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পারে দুজনের মুখ ঢাকা ও মাথায় টুপি পরিহিত ছিল আর প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই দোকান বন্ধ করার সময় তারা এসেছে।
গোটা বিষয়টি পুলিশী তদন্তধীনে রয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে সিকিউরিটি কন্ট্রোলকেও সতর্ক করা হয়েছে। তারা কলকাতার কোনো হোটেল বা গেস্ট হাউসে আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারা অন্য শহর ঘুরে কলকাতা এসেছে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। পুলিশের ধারণা, অন্য কোনো শপিংমলেও ফের তারা একইভাবে টাকা হাতাতে পারে তাই শপিং মলগুলিতে সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ।
এই ঘটনার কিছু আগে একই ভাবে মাস্ক ও টুপি পড়ে একের পর এক এটিএমে হানা দিয়ে টাকা লুঠ করেছে রোমানীয় গ্যাং। তাই এবার প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি মোডাস অপারেন্ডি বদলে এবার কলকাতায় কেপমারি করতে নেমে পড়েছে রোমানীয়রাই? না কি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনো চক্র? পুলিশের তরফ থেকে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।