নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বীরভূমঃ গতকাল রাতে বীরভূমের সিউড়ি লালকুঠি পাড়ার একটি নার্সিংহোমে দু’জন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে এসে বোমাবাজি ঘটালো। নার্সিংহোমে থাকা সিসিটিভিতে সেই ভয়াবহ ছবি ধরা পড়েছে। ওই পাড়ায় থাকা স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক দেবাশিস দেবাংশীর নার্সিংহোমে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই দু’জন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে চড়ে নার্সিংহোমের গেটে দুটি বোমা ছোঁড়ে। এরপর বোমা ফেটে গোটা এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। নার্সিংহোমের লোহার গেটও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়।
তারপর পুলিশ সমগ্র বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। যদিও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দু’জন দুষ্কৃতীদের মুখ ঢাকা অবস্থা থাকায় আপাতত শনাক্ত করা যায়নি।
এই ঘটনার বিষয়ে চিকিত্সক দেবাশিস দেবাংশী বলেছেন, “লকডাউনের কারণে নার্সিংহোম বন্ধ রয়েছে। চেম্বারে রোগী তেমন আসেন না। অন্যান্য সময় নার্সিংহোমের সামনে অনেক রোগী ও তাদের পরিবার-পরিজনরা দাঁড়িয়ে থাকেন। রোগীরা থাকলে অনেকের মৃত্যু হতে পারতো।
এছাড়া পরিকল্পিতভাবেই এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। কারণ সিসিটিভিতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে বহু সময় থেকে ওই দু’জন দুষ্কৃতী নার্সিংহোম থেকে কিছুটা গ্যাস সরবরাহ দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তাদের গাড়ির নম্বর ছিল না। কিছুক্ষণ পর বোমা ছুঁড়ে দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায়। এরা ভাড়াটে গুন্ডা। এমনকি যারা বোমা ছোঁড়ার পরিকল্পনা করেছে তারা তিন দিন আগে রাতের বেলা ফোনে হুমকিও দিয়েছে। ওই দু’জন দুষ্কৃতীর তাদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে।
যেখানে মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য আসেন সেখানেই বোমাবাজির ঘটনা অনভিপ্রেত। পশ্চিমবঙ্গের এই অরাজক রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দুষ্কৃতী হানায় যুক্তদের পুলিশ না ধরলে আমরা কি চিকিত্সা বন্ধ রেখে বাড়িতে বসে থাকব? করোনা পরিস্থিতিতে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিত্সা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি। কয়েকদিন আগে আমাদের এক বন্ধুসম চিকিত্সক মারা গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বোমা! পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে এই লজ্জা কোথায় রাখবো? আশা করব পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করবে”।
জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, “দুষ্কৃতীদের মুখ ঢাকা থাকায় চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে। ওই চিকিত্সককে কারা হুমকি দিয়েছেন তাও তদন্ত করে দেখা হবে”।
এই বোমাবাজির ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।