একটানা বর্ষণে ভাঙছে সেতু, প্লাবিত হচ্ছে বহু গ্রাম

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ঘূর্ণাবর্ত ও মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে প্রায় গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে টানা বৃষ্টি চলছে। ফলে জেলার বহু অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কোথাও সেতু ভেঙে পড়েছে। আবার কোথাও সেতুর উপর দিয়ে জল বইছে। তাতে সেতু না জল বোঝার উপায় নেই। রাস্তাতেও অথৈ জল। এর জেরে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বহু গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

বীরভূমের সিউড়ির দুই নম্বর ব্লকের অন্তর্গত ধইটে গ্রামের কাছে চন্দ্রভাগা নদীতে সেতু ভেঙে পড়েছে। এদিকে কোমা, জানুরী, ‌ভগীরথপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা এই সেতু পেরিয়ে সিউড়ি যাওয়ার প্রধান সড়কে ওঠেন। কিন্তু এটি ভেঙে পড়ায় সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েন। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, “প্রশাসনকে বার বার বলা সত্ত্বেও বড়ো সেতু তৈরী করা হয়নি। কিছু দূরে বিকল্প একটি সেতু রয়েছে। তবে সেটিও ডুবে গিয়েছে।”


আর ক্রমাগত বৃষ্টির জেরে কোপাই নদীর জল বৃদ্ধি পেয়ে বোলপুরে গোয়ালপাড়ার সেতু ডুবে গিয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কেউ যাতে পারাপার না করেন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আবার বোলপুরের সতীপীঠ কঙ্কালীতলাতেও একহাঁটু জল জমেছে। ইলামবাজার থানার অন্তর্গত মহেশাপুর গ্রামে রাস্তায় ধস নেমেছে। সেচখালে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় তা পার হওয়ার সময় একটি গাড়ি ভেসে গিয়েছে। অন্যদিকে, ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে বাঁকুড়াতেও একাধিক সেতু এবং সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বহু কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে।


আবহাওয়া দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গতকাল সকালবেলা ৮টা ৩০ মিনিট থেকে আজ সকালবেলা সাড়ে ৮টা অবধি এখানে ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টিতে গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী, কংসাবতী এবং দ্বারকেশ্বর নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর দ্বারকেশ্বর নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় শহর লাগোয়া মীনাপুর কজওয়েতে জল জমেছে। সেখানে জলের উচ্চতা প্রায় চার ফুট। এই কজওয়ে দিয়ে বাঁশি, আড়ালবাঁশি, জামবনি সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা বাঁকুড়া শহরে যাতায়াত করেন। ফলে ওই গ্রামের বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন।


এছাড়া দ্বারকেশ্বরের অন্যতম প্রধান উপনদী ডাংরায় জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সংযোগকারী সড়কে দু’টি সেতুতে জল জমে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। তাছাড়াও জামথোল সেতুতে জল জমায় জোড়হীরা মণিহারা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর আড়রার কাছে অন্য একটি সেতুর উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় ছাতনা কাশীপুর সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি মেজিয়া রেল কলোনীতে পাঁচ ফুট থেকে ছয় ফুট উচ্চতা অবধি জল জমায় এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। কিছু বাড়ির এক তলা জলের নীচে।

স্থানীয় একটি খালের জল ঢুকে কোতোলপুর ব্লকের ব্রহ্মডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। লাগাতার বৃষ্টিতে জেলা জুড়ে বহু কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন বলেন, ‘‘পরিস্থিতির বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জেলা এবং ব্লক স্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও তৈরী থাকতে বলা হয়েছে।’’

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031