ব্যুরো নিউজঃ অস্ট্রেলিয়াঃ রবিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডি বিচে গুলিচালনার মর্মান্তিক ঘটনায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন হামলাকারীও রয়েছে বলে জানিয়েছে । নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ। এই গণ-গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ২৯ জন আহতও হয়েছেন। যাঁদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। কাজেই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ এই হামলাকে স্পষ্ট ভাবে ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’ বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল লক্ষ্য ছিল বন্ডি বিচে আয়োজিত ইহুদিদের ‘হানুকা’ উৎসব। এ দিন ছিল হানুকার প্রথম দিন। এই দিনে ইহুদিদের জন্য বড় আনন্দের। অস্ট্রেলিয়ার এই জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতে এ দিন যখন ইহুদি সম্প্রদায়ের সদস্যরা হানুকার প্রথম দিন উদযাপনে মেতেছিলেন, তখন আচমকাই তাদের উপরে এই নৃশংস হামলা হয়। অস্ট্রেলীয় ইহুদি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্তা রবার্ট গ্রেগরি জানিয়েছেন, এ দিন হানুকার প্রথম দিন উপলক্ষে বন্ডি বিচে ‘চাবাদ’ নামে একটি ইহুদি আউটরিচ সংস্থা এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এই অনুষ্ঠানই ছিল সন্ত্রাসবাদীদের নিশানা।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ ক্ষোভ প্রকাশ করে দাবী করেন, এটা ‘ইহুদি অস্ট্রেলীয়দের উপরে পরিকল্পিত হামলা’। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘ইহুদি অস্ট্রেলীয়দের উপরে হামলা মানে প্রত্যেক অস্ট্রেলীয়র উপরে হামলা।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফটোগ্রাফার ড্যানি রিডলি জানিয়েছেন, বন্দুকধারীদের থেকে তিনি ১০০ ফুট দূরে ছিলেন। গুলি থেকে বাঁচতে একটি পার্কিং মিটারের আড়ালে লুকিয়েছিলেন তিনি। এক পুলিশ অফিসারকে দ্রুত পাল্টা জবাব দিতে দেখেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলেছিল গুলিবর্ষণ। আবার কারোর কথায়, গুলিবর্ষণ যখন শুরু হয়, তখন তিনি তাঁর ১৭ মাসের সন্তানকে নিয়ে সৈকতে ছিলেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
গুলির শব্দ শুনে তিনি একটি ধাতব বারবিকিউয়ের নীচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি জানান, মাথার উপর দিয়ে যখন গুলি উড়ে যাচ্ছিল, তখন তিনি বারুদের গন্ধ পাচ্ছিলেন। পুলিশের প্রাথমিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দু’জন সন্ত্রাসবাদী এই হামলা চালিয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যজন গুরুতর আহত। পুলিশ আরও জানিয়েছে, আর কোনও বন্দুকধারী এই হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল না বলে তারা নিশ্চিত। পরিস্থিতি বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। যদিও হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে এমন গণ-গুলিবর্ষণ অত্যন্ত বিরল। বিশ্বের উন্নত দেশগুলির মধ্যে বন্দুক-সম্পর্কিত মৃত্যুর হার এখানে সবচেয়ে কম।










