মোবাইল চোর সন্দেহে নাবালকে ঝুলিয়ে ইলেকট্রিক শক দেওয়ার অভিযোগ মহেশতলায়

Share

পিঙ্কি পালঃ দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাঃ কলকাতার অদূরে মহেশতলা পুরসভা এলাকায় জিন্‌সের পোশাক রং করার একটি কারখানায় গুরুতর আহত অবস্থায় ১৪ বছর বয়সী এক ছেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনাটির ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, পরনে জিন্‌সের হাফ প্যান্ট। গায়ে পুরনো টিশার্ট। ছেলেটিকে ঝোলানো রয়েছে উল্টো করে। বাঁধা দুই হাতে দৃশ্যমান বিদ্যুতের তার! খানিক দূরে এক যুবক ওই তারটি বিদ্যুতের প্লাগে গুঁজছেন কিছু ক্ষণ অন্তর। কেঁপে কেঁপে উঠছে উল্টো করে ঝুলতে থাকা কিশোরের শরীর।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মোবাইল চুরির সন্দেহে ১৪ বছরের সামসাদ আলিকে ওই ভাবে নির্যাতন করছিলেন কারখানারই কয়েক জন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক। নাবালককে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারধর এবং বিদ্যুতের ‘শক’ দেওয়ার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে শোরগোল শুরু হয়। ‘নির্যাতন’-এর ওই ভিডিয়ো দেখে নাবালকের পরিবার ইসলামপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। একই সঙ্গে মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানাতেও একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, যেখানে ওই ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি মহেশতলা পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কানখুলি পূর্বপাড়া এলাকা। শাহেনশাহ নামে শিলিগুড়ির এক বাসিন্দা ওই এলাকায় একটি বাড়িভাড়া করে জিন্‌সের পোশাক রং করার কারখানা চালান। সেখানে শ্রমিক হিসাবে যে কয়েক জন কাজ করে, তাদের মধ্যে এক জন ইসলামপুরের বাসিন্দা, ১৪ বছরের সামসাদ। ছেলেটির পরিবারের দাবি, মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। শুধু তা-ই নয়, ‘ইলেকট্রিক শক’ দেওয়া হয় ওই কিশোরকে। সোমবার থেকে তার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। ইসলামপুর ছঘরিয়া গ্রামে বসে ছেলের ওই রকম ভিডিয়ো দেখে চমকে যায় পরিবার।


ওই পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, দেড় মাস আগে সামসাদ এবং তার দাদা আনসার আলিকে এক পরিচিতের মাধ্যমে কলকাতায় কাজ করতে পাঠান তাঁরা। সামসাদ কারখানার মালিক শাহেনশাহের মোবাইল চুরি করে বলে অভিযোগ। সামসাদের এক কাকা বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে আমরা জানতে পারি, ও মোবাইল চুরি করেনি। অপবাদ দিয়ে ওকে ওই ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।’’ জানা যাচ্ছে, ভিডিয়ো দেখে ইসলামপুর থানার পাটাগোড়া ফাঁড়ির পুলিশের দারস্থ হন সামসাদের পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের দাবি, ছেলেকে সুস্থ ভাবে বাড়িতে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হোক পুলিশ।

অন্য দিকে, এই ঘটনায় মহেশতলার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে শিশু সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পর অভিযুক্ত এবং তাঁর সঙ্গীরা পলাতক। তবে শাহেনশাহের পরিবারের এক সদস্যার যুক্তি, ‘‘ভিডিয়োটি মজা করার জন্য বানানো হয়েছিল।’’



Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
August 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031