চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ মাত্র তিন মাসের মধ্যে আবারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুললো স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের এক জন ছাত্র। ওই পড়ুয়া নাম গোপন রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়ে হস্টেল ছাড়লেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের সিডি ব্লকে থাকত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে অভিযোগ করে যে, ‘‘হস্টেলে যাওয়ার পর থেকে আমার উপর নানা ভাবে র্যাগিংয়ের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে যখন হস্টেলে মেস চালু হয় তখন আমাকে মেস কনভেনর করা হয়। কিন্তু আমি নতুন ও আমার সাথে আরো এক জন মেস কনভেনরও নতুন।
তাই মেস কমিটি যে ভাবে বাজার করতে বলে, সেই ভাবে বাজার করি। তা সত্ত্বেও গত ২৫ শে নভেম্বর বাজারের পর মাছের টুকরো ছোটো কেন এবং ডাল পাতলা হয়েছে কেন? এই বলে আমাকে অকথ্য গালাগালি করা হয়। পরে রাতেরবেলা খাবারের সময়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। আর মেস কনভেনরের পদ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর হুমকি অবধি দেওয়া হয়।
এছাড়া আমাকে বাদ দিয়ে আমাকে নিয়ে একটা জিবি ডাকা হয়। যাতে বলা হয় যে, ওর খুব অ্যাটিটিউড। তাই ওকে একটু টাইট দিতে হবে। তারপর থেকে আমাকে দেখে বেশ কয়েকজন নানা অঙ্গভঙ্গি করে। ফলে হস্টেলে থাকতে সেফ ফিল করছি না। আর আমার পক্ষে বাইরে থেকে পড়াশোনা চালানো সম্ভব নয়।’’
যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন জুটার তরফে অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায় এই বিষয়ে জানান, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মেন হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টকে না মেনে কোনো ছাত্রের (জেলে নেই এমন) বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা না নিয়ে বিভিন্ন কমিটির নাম করে দোষীদের আড়াল করে যাচ্ছেন। যার ফলস্বরূপ আরো একটি র্যাগিংয়ের ঘটনা।”
প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসেই স্বপ্নদীপ কুণ্ড নামে স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের দেহ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচ থেকে উদ্ধার হয়। যা নিয়ে ব্যাপক হইচইও হয়েছিল। আর এই ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠায় বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। যাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীও ছিলেন।