চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ ২০১৬-র এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য চাকরিহারাদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবিতে এবং কসবায় পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এসএসসি দফতরের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনশনে বসেছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সেই আবহেই এ বার ঘটনাস্থলে পৌঁছোলেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখান থেকে আরও এক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করলেন তিনি। প্রশ্ন তুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও।
অনশন শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই এসএসসি দফতরের সামনে পৌঁছোন অভিজিৎ। ছিলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ এবং এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলও। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখাও করেন তাঁরা। সেখানেই রাজ্যের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে অভিজিৎ বলেন, ‘‘ও সব ভাঁওতাবাজি! তা হলে নিরীহ শিক্ষকদের উপর মামলা করলেন কেন? আসলে ওঁরা জানেন ওঁরা অন্যায় করেছেন। তাই ওঁদের সুষ্ঠু ভাবে বিষয়টি মেটানোর কোনও ইচ্ছা নেই। ওঁরা এটা নিয়ে যতটা সম্ভব রাজনীতি করা যায়, তা-ই করছেন।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পর বুধবারই এসএসসিকে ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনার জন্য দু’দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। ঘোষণা করেছিলেন, এর অন্যথা হলে শনিবার তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। কসবায় চাকরিহারাদের উপর লাঠিচার্জের প্রতিবাদে মমতাকে লেখা চিঠি ছিঁড়লেন অভিজিৎ, যাচ্ছেন না শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। অভিজিৎ বৃহস্পতিবার আরও জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত যা করেছেন, দলকে জানিয়েই করেছেন। প্রসঙ্গত, মমতাকে লেখা চিঠি বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যকে পৌঁছে দেবেন বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
অথচ বুধবার কথা দিয়েও বিকাশ ভবনে যাননি অভিজিৎ। এর পরেই তাঁকে কটাক্ষ করে ব্রাত্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে চাওয়ায় দলীয় রাজনীতিতে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হল কি না, দল ওঁকে বারণ করল কি না, সে সব উনিই বলতে পারবেন!’’ সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে অভিজিৎ জানালেন, সব সময়েই তাঁর ‘পাশে’ রয়েছে দল। যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দল যে ওঁর পাশে নেই, সেটা বুধবারই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এটাও স্পষ্ট যে, উনি মুখে বলছেন ফর্মুলা আছে, সমাধান চান, আর বিজেপি সেই সমাধান করতে দিতে চায় না।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
শুধু তা-ই নয়, ধর্নাস্থল থেকে আরও এক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দুষেছেন অভিজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘যা হচ্ছে, তা তো মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হচ্ছে। একটু পরেই হয়তো পুলিশ এসে এখানেও ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা সহমর্মিতা জানাতে এসেছি। ভেঙে পড়বেন না। আমরা সম্পূর্ণ ভাবে আপনাদের পাশে আছি।’’ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন রূপা এবং চিত্তরঞ্জনও। রূপা বলেন, ‘‘কাদের ঘুষ দিয়ে চাকরি হয়েছে, খুঁজলেই তাঁদের পাওয়া যাবে। তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কেন?’’ এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোটা ঘটনায় ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
তিনি জানান, এসএসসির বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে কিছু কথা বলতে চান তিনি। চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘‘আমি অধ্যাপক সিদ্ধার্থ মজুমদারকে স্পষ্ট ভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, উনি এই সরকারের কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। উনি যে ভাবে তা পরিচালনা করেছিলেন, তার পর ওঁকে যে ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা ওঁর কাছেও বেদনাদায়ক। আমি চাইব উনি স্বমহিমায় ফিরুন। নিজের মানসিকতা, শিক্ষা, সংস্কার নিয়ে মাথা উঁচু করে উঠে দাঁড়িয়ে কাউকে পরোয়া না করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে যান।’’