নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ বাঙালির বরাবরের পছন্দের তালিকায় থাকা দিঘা প্রায় প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহন্তে শনি-রবিবার দিঘায় ভিড় থাকে। অনেকেই তাই বর্ষবরণ উদ্যাপন করতে ছুটেছেন দিঘায়। সমুদ্রের জলে গা ডুবিয়ে, সৈকতে বসে মিঠে রোদ পোহাচ্ছেন বহু পর্যটক। কেউ কেউ আবার জগন্নাথধামে ছুটছেন। বছর শেষের সূর্যাস্ত দেখার পর থেকেই সৈকত নগরী যেন এক মায়াবী রূপ ধারণ করেছে। বুধবার সকাল থেকেই দিঘার আকাশে-বাতাসে উৎসবের আমেজ। হোটেলগুলিতেও থিকথিকে ভিড়।

গত কয়েক বছরে দিঘার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ঝকঝকে রাস্তাঘাট আর আধুনিক আলোকসজ্জায় দিঘা যেন নতুন রূপে ধরা দিয়েছেন পর্যটকদের কাছে। তার সঙ্গে দোসর হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। বুধবার রাতে বর্ষবরণকে স্মরণীয় করে রাখতে সৈকত জুড়ে উপচে পড়েছে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। ওল্ড দিঘার ‘দিঘালী’র সামনে ঠিক রাত ১২টায় শব্দহীন রঙিন বাজির প্রদর্শনীর মাধ্যমে নতুন বছর ২০২৬-কে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

শুধু সমুদ্র সৈকত বা জগন্নাথধাম নয়, দিঘার হোটেলগুলিও নিজের মতো করে বর্ষবরণের উৎসবের আয়োজন করেছে। দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র জানান, দিঘার জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। তাই বছর শেষে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নামী শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমানে দিঘা জুড়ে প্রায় ৮০০ হোটেল রয়েছে, যার অধিকাংশই এখন পর্যটকে ঠাসা। পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য একাধিক হোটেলেও তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
ভিড় সামাল দিতে কোমর বেঁধে নেমেছে পুলিশ-প্রশাসনও। প্রায় দিঘা চত্বরকে মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা— সর্বত্র পুলিশের টহলদারি চোখে পড়ার মতো। সমুদ্রতটে পর্যটকদের সচেতন করতে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)-এর পক্ষ থেকে লাগাতার মাইক প্রচার চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে মত্ত অবস্থায় সমুদ্রে নামা বা উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে স্নান করা নিয়ে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। বিপদে পড়লে পুলিশের সাহায্যে নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে জানিয়েছেন, ‘‘সৈকত এলাকায় নিয়মিত পেট্রোলিং চলছে। হোটেলগুলিতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া বা পর্যটকদের আইনানুগ কোনও সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করা হলে পুলিশ কঠোর হাতে তার মোকাবিলা করবে।’’ বুধবার রাত থেকেই পর্যটকদের এই ঢল নামায় দিঘার অর্থনীতিতেও খুশির হাওয়া। নতুন বছরের প্রথম দিনে এই ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here









