নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মধ্যপ্রদেশঃ দীপাবলির আলোর উৎসব বিষাদে পরিণত হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে বাজি ফাটাতে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে ৩০ জনেরও বেশি। আহত কমপক্ষে ৩০০ জন! সকলেরই চোখে আঘাত। আর এর জন্য দায়ী কার্বাইড গান। এবারের দীপাবলিতে আতশবাজির মধ্যে ‘হিট’ বাজি ছিল কার্বাইড গান বা এগ্রি-ক্যানন। এই বাজি ফাটাতে গিয়েই শিশু সহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।

এই কার্বাইড গান সাধারণত কৃষকরা ক্ষেত থেকে বাঁদর ও পাখি তাড়াতে ব্যবহার করে থাকেন। এটি ক্যালসিয়াম কার্বাইড, গান পাউডার ও দেশলাইয়ের উপরের অংশ দিয়ে তৈরি হয়। এর মধ্যে জল দিলে ক্যালসিয়াম কার্বাইড অ্যাসিটিলিন গ্যাস উৎপাদন করে, যার জেরে তীব্র বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণের জেরে প্রচন্ড উত্তাপ তৈরি হয়, ছড়ায় বিষাক্ত গ্যাস। ভেঙে টুকরোও ছিটতে পারে চোখে-মুখে। মধ্য প্রদেশে সেটাই হয়েছে। সূত্রের খবর, কমপক্ষে ৩০০ জন আহত হয়েছেন কার্বাইড গানে। অধিকাংশেরই অ্যালকালাই ইনজুরি হয়েছে, যার কারণে স্থায়ী বা চিরতরে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ৩০ জন দৃষ্টি হারাতে বসেছেন।

রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী রাজেন্দ্র শুল্কা এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা বিষয়টি জানতে পারার পরই সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ মিটিং ডাকা হয়েছে। ভোপালে ৭ জন শিশু গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গোয়ালিয়র ও বিদিশাতেও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।” এইমস ভোপালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত দুই ধরনের আঘাত হয় এইসব ক্ষেত্রে-অ্যাসিড ও অ্যালকালাই। অ্যাসিড ইনজুরি তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতি করতে পারে, কিন্তু অ্যালকালাই ইনজুরি ভয়ঙ্কর। চোখে অ্যালকালাই আঘাত এমন ক্ষতি করে দেয় যে তা আর ঠিক করা যায় না। পরবর্তীতে যাতে আরও ক্ষতি না হয়, সেইটুুকুই চিকিৎসায় নিশ্চিত করা সম্ভব।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এইমস ভোপালে ১৩ জন এবং গান্ধী মেডিক্যাল কলেজে ১২ জন রোগীকে আনা হয় বৃহস্পতিবার। মূলত ভোপাল পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকেই কার্বাইড গানে আহতদের খবর মিলছে। গোয়ালিয়র ও জব্বলপুর থেকে ৫০ জন আহতের খোঁজ মিলেছে। যারা গুরুতর আহত, তাদের দিল্লি এইমসে স্থানান্তর করা হচ্ছে। শুধুমাত্র ভোপালেই এই তিনদএই তিনদিনে ১৫ জনের সার্জারি করতে হয়েছে কার্বাইড গান থেকে দুর্ঘটনার কারণে। কার্বাইড গান, পিভিসি মাঙ্কি রিপেলার গান হিসাবে অনলাইনে দেদার বিক্রি হচ্ছে। অনলাইনে যেখানে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা তা খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়। সেগুলির মানও খারাপ। এই ঘটনায় পুলিশ রাস্তার ধারের দোকান থেকে ৪২টি কার্বাইড গান বাজেয়াপ্ত করেছে। রাস্তার ধারের দোকান থেকে দেড় কেজি ক্যালসিয়াম কার্বাইড বাজেয়াপ্ত করা হয় আর একজন বিক্রেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।













