মাঝসমুদ্রে আগুন লেগে মৃত্যু হলো ৫ জনের

Share

ব্যুরো নিউজঃ ইন্দোনেশিয়াঃ ইন্দোনেশিয়ায় মাঝসমুদ্রে আগুন ধরল যাত্রিবাহী ছোট জাহাজে। রবিবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার সুলায়েসি দ্বীপের কাছে। জাহাজে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাও। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, জাহাজটিতে প্রায় ৩০০ জন যাত্রী ছিলেন। আগুন ধরে যাওয়ার পরে আতঙ্কে জাহাজ থেকে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন অনেকে। এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজ থেকে ২৮৪ জন যাত্রী সহ জাহাজের কর্মীদেরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার নর্থ সুলায়েসি প্রদেশের তালাউদ শহর থেকে মানাডো শহরের দিকে যাচ্ছিল যাত্রিবাহী ছোট জাহাজ ‘কেএম বার্সেলোনা ৫’। ওই যাত্রাপথেই স্থানীয় সময় অনুসারে দুপুর দেড়টা নাগাদ জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনাস্থলের কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, জাহাজের উপরের ডেকগুলি দাউদাউ করে জ্বলছে। ঘন কালো ধোঁয়া বার হচ্ছে জাহাজ থেকে। আতঙ্কিত যাত্রীরা লাইফ জ্যাকেট পরে সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছেন, সেই দৃশ্যও ধরা পড়েছে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিয়োয়।

যে যাত্রীরা আতঙ্কে সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, তাঁদেরই অনেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজের ছবি এবং ভিডিয়ো তুলতে থাকেন নিজেদের মোবাইলের ক্যামেরায়। কেউ কেউ লাইফ জ্যাকেট পরে সমুদ্র ভাসতে ভাসতেই জাহাজে আগুন ধরার দৃশ্য সমাজমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করেন এবং দ্রুত সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে স্থানীয় এক পুলিশকর্মীর স্ত্রীও রয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাঁরা জলের মধ্যে ভাসছিলেন। তার পরে তাঁদের উদ্ধার করতে পৌঁছায় নৌসেনা।


ইন্দোনেশিয়ায় ছোট বড় মিলিয়ে ১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপ রয়েছে। সে দেশে অভ্যন্তরীণ পরিবহনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম জলপথই। এক দ্বীপ থেকে অন্যত্র যাওয়ার জন্য এমন ছোট ছোট জাহাজের উপরেই নির্ভরশীল ইন্দোনেশিয়াবাসী। রবিবার ওই যাত্রিবাহী জাহাজে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরেই ইন্দোনেশিয়ার নৌসেনার তিনটি জাহাজ দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। কি কারণে জাহাজে আগুন লাগল, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার নৌসেনার ভাইস অ্যাডমিরাল ডেনি হেন্দ্রতা জানিয়েছিলেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজটি থেকে সকলকে উদ্ধার করাই প্রাথমিক লক্ষ্য। কী ভাবে জাহাজটিতে আগুন ধরল, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ইন্দোনেশিয়ায় এর আগেও বিভিন্ন সময়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বা কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। কখনও গত ১৪ জুলাই ইন্দোনেশিয়ার মেন্টাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাছে ঝড়ের সময়ে একটি স্পিডবোট ডুবে গিয়েছিল।


ওই সময় স্পিডবোটটিতে ১৮ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককেই পরে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে ওঠে। চলতি মাসেরই শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের কাছে একটি বড়সড় জাহাজ দুর্ঘটনা ঘটে। পর্যটকদের কাছে অন্যতম পছন্দের জায়গা এই দ্বীপটি। গত ২ জুলাই একটি জাহাজ ডুবে যায় বালির কাছে। দুর্ঘটনায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ আরও ১৬ জন। দু’সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি উদ্ধার কর্মী, তিনটি নৌসেনার জাহাজ, ১৫টি নৌকা এবং হেলিকপ্টার দিয়ে খোঁজ চালিয়েও তাঁদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
October 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031