অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ গতকাল বিজেপি শমীক ভট্টাচার্যকে দলের রাজ্য সভাপতি নির্বাচিত করেছে। আর আজ তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কর্মসূচী চলছে। কিন্তু এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলের প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ ডাক পেলেন না। পাশাপাশি দলের আরেক প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ও আমন্ত্রিত নন।
দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘এই অনুষ্ঠানে আমি যাচ্ছি না, কারণ, আমাকে আলাদা করে কোনো খবর দেওয়া হয়নি। আমি সভাপতি নির্বাচনের ভোটার নই। যারা প্রদেশ পরিষদ সদস্য, তারাই ভোটার। আজকের অনুষ্ঠানেও তাদের ডাকা হয়েছে। তার সাথে আরো কয়েক জন ডাক পেয়েছেন। আমার ওখানে যাওয়ার কথা নয়।’’
তথাগত রায় বলেন, ‘‘আমন্ত্রণ পেলেও আমি যেতে পারতাম না, কারণ, আমার জ্বর হয়েছে। গতকাল রাতেরবেলা শমীক ফোন করেছিল। আমাকে বলেছিল, ‘আপনার পরামর্শ তো প্রয়োজন হবেই।’ আজ একটা অনুষ্ঠান আছে বলছিল। সেটা শুনেই আমি ওকে বলেছি যে, আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হবে না। কারণ আমার জ্বর।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
দিলীপ ঘোষ রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া থেকেই দূরে ছিলেন। আগামীকাল প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতে সভাপতি পদের জন্য সল্টলেকের বিজেপির দপ্তরে মনোনয়ন জমা দেওয়া ও স্ক্রুটিনির কাজ হয়েছে। সেখানে শুধু শমীক ভট্টাচার্যের একটিই বৈধ মনোনয়ন জমা এবং গৃহীত হয়েছিল। যার ভিত্তিতে তিনি নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
আর এদিন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় বিজেপির নিযুক্ত নির্বাচনী আধিকারিক রবিশঙ্কর প্রসাদ শমীক ভট্টাচার্যের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে শংসাপত্র তুলে দিলেন। তবে দিলীপ ঘোষ ডাক পেলেন না কেন তা নিয়ে নানা জল্পনাও তৈরী হয়েছে। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে এই বিষয়ে মুখ না খুললেও, দলের একটি সূত্রের দাবী, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ইচ্ছা মেনেই আপাতত দিলীপ ঘোষকে দলীয় কোনো কর্মসূচীতে ডাকা হচ্ছে না।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দিলীপ ঘোষ দিঘায় জগন্নাথধাম উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যাওয়ায় কার্যত বিজেপির নেতৃত্বের রোষেই পড়েছেন। দিলীপ ঘোষও দলের একাংশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। প্রকাশ্যে ‘আদি-নব্য’ দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়েছেন। পর পর এই ধরণের কিছু ঘটনায় তাঁর দলের সাথে দূরত্বও বেড়েছে। দিলীপ ঘোষ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়ার পরে ৬ ই মে রাজ্য দপ্তরে বিজেপির প্রথম বড়ো বৈঠক ছিল।
কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা সেখানে রাজ্য বিজেপির জনাবিশেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রীকে ডেকে পাঠিয়ে প্রত্যেকের সাথে আলাদা আলাদা করে কথা বলেছিলেন। সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ দুই সংগঠন সম্পাদক, পাঁচ সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এমনকি, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষ ডাক পাননি।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
পরের দিন বিধাননগরের সেক্টর ফাইভে একটি হোটেলে বিজেপির আরো বড়ো বৈঠক বসে। সেখানে রাজ্য পদাধিকারীরা এবং জেলা সভাপতিরা ডাক পান। প্রত্যেক জেলা থেকে আরো তিন জন করে প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল। দিলীপ ঘোষকে সেখানেও দেখা যায়নি। অনেকের কথায়, দিলীপ ঘোষ যেহেতু রাজ্যের পদাধিকারী নন, তাই ডাকা হয়নি। কিন্তু দলের অন্য একটি অংশের যুক্তি, পদাধিকারী না হলেও দিলীপ ঘোষ রাজ্য কোর কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন সভাপতি। ওই বৈঠকে তাঁর মতো নেতাকে ডাকায় কোনো বাধা ছিল না।