বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে প্রাক্তন ভিসিকে তলব করলো সিআইডি

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক তছরুপের অভিযোগে চাঞ্চল্যকর মোড়। এবার সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) প্রাক্তন ভিসি নিমাই চন্দ্র সাহাকে জেরা করার জন্য ডেকে পাঠালো। আগামীকাল সকালবেলা ১০ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে নিমাই চন্দ্র সাহাকে বর্ধমানের সিআইডি অফিসে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।  বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে দু’কোটি টাকা উধাও হয়ে গেল কিভাবে তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এই ঘটনায় শাসক ও বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠন একত্রে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে দাবী তুলেছে। এসএফআই পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক উষশী রায় চৌধুরী জানান, “আমরা বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলন করছি। শুধু প্রাক্তন উপাচার্যই নয়, এর সাথে যারা যুক্ত রয়েছেন, তাদের অবিলম্বে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।” এই ঘটনায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের ইউনিট প্রেসিডেন্ট আকাশ গড়াই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন।

আকাশ গড়াই বলেন, “বিষয়টি বিচারাধীন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উধাও হওয়া টাকা ফেরত আসুক ও দোষীরা শাস্তি হোক বলে জানান  ছাত্রপরিষদের নেতা।” বিষয়টি নিয়ে মামলাকারী দেবমাল্য ঘোষ জানালেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে থাকা ফিক্সড ডিপোজিট কীভাবে অন্যের অ্যাকাউন্টে গেল তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারী, শিক্ষক শিক্ষিকাদের হয়ে মামলা করেছি।”


দেবমাল্যের বক্তব্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেই দায় সেরেছে। কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা করেনি। এমনকি কোন এফ আই আর করেনি বলে দাবি। প্রাক্তন উপাচার্য নিমাই চন্দ্র সাহাকে তলবের বিষয়ে দেবমাল্য বলেন, “ওই সময় কালেই এই টাকা উধাওয়ের ঘটনা ঘটেছে। সিআইডির পাশাপাশি এবার ইডিও এই ঘটনার তদন্ত করছে।”

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গোস্বামী বলেন,  “আমরা শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধীনে তদন্ত চাইছিলাম। ইডিও এই ঘটনার তদন্ত করছে, তাই সি আই ডি তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছে। গোটা ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং উধাও হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে।”


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্কর নাথ টেলিফোনে জানান, ইডি বিষয়টি তলিয়ে দেখছে। আমাদের কাছ থেকে ইডি অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফিক্সড ডিপোজিট প্রি ম্যাচুরিটি করিয়ে অচেনা ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হয়। অভিযোগ ওঠে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের যোগ সাজশে এই টাকা নয় ছয় হয়। সেসময় এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলাও হয়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।  কিন্তু এফ আই আর করা হয় প্রায় এক বছর পরে। যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই ওঠে নানান প্রশ্ন।


সিআইডি রিপোর্ট অনুযায়ী, ষোলোটি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা এখন জামিনে। ২ জন আগাম জামিন নিয়েছেন। একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের থেকে ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে নয়ছয়। সি আই ডির পাশাপাশি এই মামলায় ইডিও তদন্ত করছে।

DISCLAIMER: This channel does not promote any violent, Harmful or illegal activities. All content provided by this channel is meant for an educational purpose only.

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031