চরের কারণে নদীতে আটকে যাচ্ছে লঞ্চ পরিষেবা

Share

পিঙ্কি পালঃ দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাঃ উলুবেড়িয়া-আছিপুর ফেরি পরিষেবা দীর্ঘ দিনের। আগে জেটিঘাট না থাকায় যাত্রীদের কাদা ভেঙে ভুটভুটিতে উঠতে হত। কয়েক বছর আগে জেটি তৈরী হয়। লঞ্চ চালু হয়। কিন্তু হাওড়ার উলুবেড়িয়া ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার আছিপুরের মধ্যে অবস্থিত হুগলী নদীতে গজিয়ে ওঠা চরের জন্য মাঝনদীতে থমকে যাচ্ছে ইঞ্জিন, থমকে দাঁড়াচ্ছে লঞ্চ। ফলে ফেরি পরিষেবায় যথেষ্ট বিঘ্ন ঘটায় মানুষজন নাজেহাল হচ্ছেন। ভাটার সময় পরিষেবা বন্ধ রেখে জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সমস্যা সমাধান কোন পথে হবে, তার জানা নেই।

সম্প্রতি উলুবেড়িয়া থেকে সন্ধ্যায় আছিপুরের দিকে রওনা হওয়া একটি লঞ্চ চরে আটকে যায়। শত চেষ্টাতেও সরানো যায়নি। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে জোয়ার এলে লঞ্চটি এগোয়। ব্যস্ত সময়ে ভাটা হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রী, অফিসযাত্রী সহ সকলে বিপাকে পড়ছেন। আর সকলকে জেটির বাইরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। লঞ্চ-কর্মীরা জানান, ‘‘ভাটার সময়ে চার থেকে ছ’বারের পারাপার বন্ধ রাখতে হচ্ছে। লঞ্চ সহ ভুটভুটি অবধি চরে আটকে যাচ্ছে। এদিকে নদীতে উলুবেড়িয়ার দিকে জাহাজ চলে। অতএব জলের গভীরতা ভালোই। সমস্যা অছিপুরের দিকে।’’


লঞ্চঘাটের এক জন কর্মীর কথায়, ‘‘আছিপুরের দিকে পূজালি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সেখানকার ছাই জাহাজে বিভিন্ন জায়গায় যায়। ওই ছাই নদীতে পড়েই চর গজিয়েছে।’’ হাওড়া জেলা পরিষদ এই ফেরি পরিষেবা দেখাশোনা করে। তবে অভিযোগ, ‘‘তাদের বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি।’’ আর জেলা পরিষদের দাবী, ‘‘ড্রেজিংয়ের দায়িত্ব কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের।’’ কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের বক্তব্য, ‘‘নদীর যে অংশে জাহাজ চলাচল করে, সেই অংশ নিয়মিত ড্রেজিং করা হয়। বাকি অংশের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের।’’


অন্যদিকে, জলপথ পরিবহণের এক জন কর্তা জানান, ‘‘হাওড়া জেলা পরিষদ ওই ফেরি পরিষেবা দেখে। বিষয়টি আমাদের জানা নেই। পরিষেবায় সমস্যা হলে পরিবহণ দপ্তর বলতে পারবে।’’ পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জাহাজ চলাচলের জন্য পোর্ট ট্রাস্ট যেভাবে ড্রেজিং করে, মানুষের সুবিধার জন্যও তা করা উচিত। নদীর গতিপথ ঠিক রাখতে হলে নিয়মিত পলি তোলা দরকার। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। পূজালি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকেও ভূমিকা পালন করতে হবে।’’ কিন্তু চর যে ভাবে বাড়ছে, অবিলম্বে ড্রেজিং না হলে লঞ্চ কত দিন চলতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন উঠছে।


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
July 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031