অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ গতকাল রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে বেহালা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে তুমুল উত্তেজনা তৈরী হয়। জরুরী বিভাগ ও মূল ফটকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। এমনকি এক জন নার্সিং স্টাফকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে মারধরও করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতেরবেলা ৮টা নাগাদ ৩০ বছর বয়সী ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা শেখ মেহমুদ আলমকে হৃদরোগে আক্রান্ত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এরপর চিকিৎসা শুরু হলে ফের হার্ট অ্যাটাক হয়। ফলে ৮টা ৪০ নাগাদ দ্বিতীয় সিপিআর দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। তারপর ৮টা ৫০ নাগাদ মেহমুদ আলমের মৃত্যু হয়। এরপর মৃতের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে জমায়েত হন। আর চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে চিকিৎসার নথিপত্র চাইতে শুরু করে। তবে হাসপাতাল জানিয়ে দেয় যে, আদালতের অনুমতি ছাড়া সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি কাউকে দেওয়া সম্ভব নয়।
তারপর রাতেরবেলা প্রায় ১০টা নাগাদ মেহমুদ আলমের আত্মীয়-পরিজন প্রায় দেড়শো লোক এনে জরুরী বিভাগের ভিতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। বাইরের গেটেও ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি নার্সিং স্টাফদেরও মারধর করা হয়। এই ঘটনায় তিন জন নার্সিং কর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, বেশ কয়েক জন রোগী আতঙ্কে বেড ছেড়ে পালিয়ে যান। আর দু’জন রোগীকে তৎক্ষণাৎ অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত এক জন চিকিৎসক এই প্রসঙ্গে জানান, “গুরুতর অবস্থায় রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছিল। খুবই অল্প সময় পেয়েছিলাম, সব রকম চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওরা কোনো কথা শুনতে চায়নি।”
হাসপাতালের সুপার বলেন, “তাণ্ডবকারীরা প্রচুর ওষুধ, ইঞ্জেকশন নষ্ট করে দিয়েছে।” পর্ণশ্রী থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে মারধর এবং ভাঙচুরের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাইশ জনকে আটক করে। এর সাথে সাথে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।