বারাসাতের প্রতিবাদ মিছিল থেকে গ্রেফতার ১৮ জন জামিনে মুক্তি পেল

Share

মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ উত্তর চব্বিশ পরগণার বারাসাতে থেকে গ্রেফতার হওয়া আঠেরো জনকে আজ বারাসাত আদালত দু’হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিল। গতকাল রাতেরবেলা অভিযুক্তরা বারাসাতে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল করছিল। পুলিশ দাবি করেছে, বার বার অনুরোধ করার পরেও পণ্যবাহী গাড়ির পথ আটকে অবস্থান করছিলেন ধৃতেরা। অনেকগুলি গাড়িতে ছিল জরুরি পরিষেবাদানকারী সামগ্রী। প্রতিবাদীদের অনেকেই ‘মত্ত’ অবস্থায় ছিলেন। তাই গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃতদের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, আন্দোলনকে থামানোর চেষ্টা হয়েছিল। তা ব্যর্থ করে দিয়েছে কোর্ট। জামিন পাওয়ার পর প্রতিবাদীরা জানিয়েছে, তাঁদের আন্দোলন চলবে।

বুধবার রাতে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পথে নেমেছিলেন বহু মানুষ। বারাসতে সেই কর্মসূচি থেকে পাঁচ জন মহিলা-সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। কেন গ্রেফতার করা হয়, তা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকবাংলো-সহ বারাসতে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল। সেই মতো আগেভাগে অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ডাক বাংলোর কর্মসূচি শেষে এক দল বারাসতের কলোনি মোড়ে গিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।


বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, এর পর ওই প্রতিবাদীদের বার বার অনুরোধ করা হলেও তাঁরা সরেননি। এর ফলে তৈরি হয় তীব্র যানজট। আটকে পড়ে জরুরি পণ্য পরিবহণকারী গাড়ি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শা নীলাঙ্গি বলেন, ‘‘অনেক বার অনুরোধ করা হয়েছিল অবরোধকারীদের, সরে গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করতে বলা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা এই নিয়ে আগে ইন্টিমেশনও দেননি। এ দিকে জরুরি পণ্যবাহী গাড়ির চালকেরা এসে বার বার অনুরোধ করতে থাকেন। তাঁদের জিনিস পচে যাচ্ছিল।’’ স্পর্শা দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীরা সহযোগিতা করেননি। যানজট বৃদ্ধি পেতেই থাকে।


অবশেষে রাত ৩টে নাগাদ আবার অনুরোধ করা হয়। এরপরেই বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করতে শুরু করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে অনেক মহিলা পুলিশকর্মীও ছিলেন। যাঁরা পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, তাঁদের ১৮ জনকে আটক করে গাড়িতে তোলা হয়। বাকিরা অবরোধস্থল থেকে সরে যান। ধৃত ১৮ জনের মধ্যে পাঁচ জন মহিলা ছিলেন।’’ স্পর্শার আরও দাবি, বিক্ষোভকারীদের উপর কোনও ‘অত্যাচার’ করা হয়নি, অনুরোধ করা হয়েছিল।


বিক্ষোভকারীদের আইনজীবী মিহির দাস বলেন, ‘‘খুনের চেষ্টা, বেআইনি জমায়েত, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মতো একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছিল ধৃতদের বিরুদ্ধে। পুলিশের অপদার্থতা ঢাকার জন্য এ সব করা হয়েছে। কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়াতে গেলে যা হয়, তা হয়েছে।’’ তিনি এ-ও দাবি করেছেন, আইন না মেনে বুধবার রাতে পাঁচ মহিলাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর এক আইনজীবী এমডি শাহিদুজ্জামান বলেন, ‘‘আন্দোলনকে থামানোর চেষ্টা হয়েছিল, তা ব্যর্থ করে দিল কোর্ট।’’

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
July 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031