মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র ওই আসনের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে সেই মর্মে চিঠি দিয়েছেন। রাজ্য বিজেপির তরফেও একই দাবী জানানো হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, ‘‘হাজি নুরুল ইসলাম নিজের মনোনয়নের সাথে প্রয়োজনীয় নো ডিউজ সার্টিফিকেট জমা দেননি।’’ মঙ্গলবার বেলা ৩টে অবধি তা দেওয়ার সময় ছিল। সেই সময় পার হওয়ার পরেই বিজেপি কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিজেপি প্রথমে বীরভূম আসনে প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে প্রার্থী করে। কিন্তু রাজ্য সরকারের থেকে নো ডিউজ সার্টিফিকেট নাও মিলতে পারে আশঙ্কা করে ওই আসনে দেবতনু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করে রেখেছিল। তবে দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল হয়। এরপর তিনি ও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে যান। কিন্তু তাতে কোনো সুরাহা না হওয়ায় শেষ অবধি দেবতনুই বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন। আর এখন সেই উদাহরণ টেনে বিজেপি হাজি নুরুল ইসলামেরও মনোনয়ন বাতিল করার দাবী তুলেছে।
এদিন দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, যদি কোনো প্রার্থী শেষ দশ বছরে কোনো সরকারী পরিষেবা পেয়ে থাকেন বা সরকারী কোনো বিল বাকি থাকে, তাহলে তা মিটিয়ে দিতে হয়। আর তার যে সরকারের ঘরে কোনো বকেয়া নেই, তা হলফনামায় জানানোর কথা। আর হাজি নুরুল ইসলাম পঞ্চদশ লোকসভার সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৮ ই মে পঞ্চদশ লোকসভা শেষ হয়েছে। আর ৭ ই মে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
অর্থাৎ বারো দিন আগে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তাঁরও নো ডিউজ সার্টিফিকেট দেওয়া বাধ্যতামূলক। আমরা যে হলফনামা দেখেছি, তাতে তিনি ওই সার্টিফিকেট জমা দেননি। যা আইন ও নির্বাচনী বিধি মেনে হয়নি। তাই আমরা ওই মনোনয়ন বাতিলের আবেদন করেছি। আর হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়ন যাতে বাতিল হয়, তার জন্য নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। আমরা শেষ অবধি লড়ব। প্রয়োজনে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’
তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘স্ক্রুটিনির শেষ অবধি বিবিধ তথ্য জমা দেওয়া যায়। আজ স্ক্রুটিনির শেষ দিন। এর মধ্যে যা জমা দেওয়ার, জমা পড়ে যাবে।’’ পাশাপাশি এও বলেন, ‘‘বিজেপি সন্দেশখালির মহিলাদের দু’হাজার টাকায় ইজ্জত বিক্রি করেছে। ওরা জানে, বসিরহাটে গণভোটে প্রত্যাখ্যাত হবে। যে কায়দায় সুরাত, ইনদওরে বিরোধী প্রার্থীদের সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি, বাংলাতেও সেই কৌশল নিতে চাইছে। তবে সফল হবে না।’’