নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নদীয়াঃ গতকাল রাতে নদীয়ার নাকাশিপাড়ায় ইদের বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। আর এই ঘটনায় ওই পঞ্চায়েত সদস্যা ও আরো ২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু সিপিএম এই ঘটনাকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দ্ব বলেই চিহ্নিত করেছে।
জানা যায়, ইদের বাজার সেরে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা তাগিরা বিবি, স্বামী জাহিদুল শেখ, পুত্র রকিব শেখ এবং প্রতিবেশী আদ্রুপ শেখকে নিয়ে গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন। জাহিদুলই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তবে বাড়ি থেকে কিছুটা আগেই দুষ্কৃতীরা রাস্তায় খেজুরের গাছ ফেলে রেখেছিল। গাড়ি দাঁড়াতেই প্রায় দশ জন দুষ্কৃতী রাস্তা আটকে গাড়ি লক্ষ্য করে পর পর বোমাবাজি শুরু করে। আর পুরো এলাকা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এরপর গাড়ির দরজা খুলে যাত্রীদের এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। এতে জাহিদুলের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আর তাগিরা বিবি, রকিব ও আদ্রুপ আহত হয়েছে।
এদিকে চিৎকার শুনে স্থানীয়েরা ছুটে এসে চার জনকে উদ্ধার করে বেথুয়াডহরি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জাহিদুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল স্থানান্তর করা হয়। আক্রান্তদের অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেস এবং সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে।’’ কিন্তু কংগ্রেস ও সিপিএম এই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী এমএস সাদি ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের মস্তান বাহিনী জমি সহ একাধিক আর্থিক কারণে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোলে যুক্ত। ভাগাভাগি নিয়ে গন্ডগোলের জেরে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এই ঘটনার সাথে সিপিএম কোনো ভাবেই যুক্ত নয়।’’
তবে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন থেকে এলাকার একটি জমি দখলকে কেন্দ্র করে হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে জুব্বরের গোষ্ঠী এবং তার বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোল ছিল। দু’পক্ষই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। আর জাহিদুল জুব্বরের ডান হাত ছিলেন।