অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু করলো। গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে জনজাতি, সম্প্রদায় ও বিভিন্ন উন্নয়ন বোর্ডগুলোকে নিয়ে বৈঠকের সময় এই ঘোষণা করেন। এই কার্ডের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্যান্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হলে বা দুর্ঘটনার কবলে পড়লে সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে পারবেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘আমাদের অনেক শ্রমিক-মজুর আছেন। যারা অন্য রাজ্যে কাজ করেন। আজ থেকে ওদের হাতে একটা আলাদা স্বাস্থ্যস্বাথী কার্ড দিচ্ছি। যখন শরীর খারাপ হয় তখন ঘরে খবর পাঠান। যে ঘরের মানুষ তা ভাববে, দেখবে। কিন্তু চিকিৎসা করানোর টাকা থাকে না। তাই আমাদের ২৮ লক্ষ বাইরে কাজ করে এমন শ্রমিক-মজুরদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আলাদা ভাবে দিচ্ছি। ওই কার্ডে পরিবার পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য বাজেটে (২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের জন্য) পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিমার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। পরে তা রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে পাশ করানো হয়। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকরা যে রাজ্যে কর্মরত সেখানে স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ইনশিয়োরেন্সের বদলে অ্যাশিয়োরেন্স ভিত্তিতে কাজ হবে। অর্থাৎ বিমার প্রিমিয়াম দেওয়ার পরিবর্তে চিকিৎসার খরচ মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়া চালানোর জন্য তৃতীয় পক্ষ ব্যবহার করা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবী, ‘‘কখনো কোনো সমস্যা হলে তা দায়িত্ব নিয়ে দেখে নেওয়া হবে।’’
পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভিন রাজ্যে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে বাইশ লক্ষের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। বাকিদের নাম নথিভুক্ত করানোর কাজ চলছে। কয়েক মাস আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের শ্রমিক গণেশ দাস যে আহত হয়েছিলেন তাকে চিকিৎসার জন্য পূর্নিয়ায় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসার খরচ দিতে সমস্যা হওয়ায় গণেশবাবুকে সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে জেলা প্রশাসন টাকা দিলে বাড়ি ফেরেন।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘সিএএ চালু হওয়ায় অনেক ভোট হারাবেন বুঝতে পারছেন। সেই কারণে এই সব বলে পরিযায়ীদের সাথে রাখার চেষ্টা করছেন। এই সব ভাঁওতা। সমগ্র দেশে ব্যবহারের জন্য যে কার্ড, সেটা আয়ুষ্মান ভারত। সেটা চালু করতে দেননি। ওঁদের কার্ড এই রাজ্যেই কাজ করে না! বাইরে কাজ করবে কিভাবে?’’