নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নয়া দিল্লিঃ সমগ্র দেশ জুড়ে সকল কৃষককে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতা সরবন সিংহ পান্ধের। এছাড়া আগামী ১০ ই মার্চ দেশব্যাপী ‘রেল রোকো’ কর্মসূচীর কথাও ঘোষণা করে জানান, ‘‘যত দিন অবধি না আমাদের দাবীদাওয়া পূরণ হচ্ছে, তত দিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’
২১ বছর বয়সী কৃষক শুভকরণ সিংহ কৃষক আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আর তাই গতকাল সরবন সিংহ সহ অন্যরা শুভকরণের স্মরণে তার গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখার সময় তিনি কৃষক আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করেন। আর এও বলেন, ‘‘যারা ট্র্যাক্টর নিয়ে দিল্লি ঢুকতে পারবেন না, তারা ট্রেন বা অন্যান্য পরিবহণে করে রাজধানী যেতে পারেন। আমরা দেখতে চাই ট্র্যাক্টর-ট্রলি ছাড়া সরকার আটকায় কিভাবে? শম্ভু ও খানৌরিতে যেমন আন্দোলন চলছিল তেমনই চলবে। আমাদের আন্দোলন আরো তীব্রতর হবে।’’
পাশাপাশি আগামী ১০ ই মার্চ বেলা ১২টা থেকে বিকেল চারটে অবধি ‘রেল রোকো’ কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত পাঞ্জাব, হরিয়ানার প্রায় দু’শো কৃষক সংগঠন আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১৩ ই ফেব্রুয়ারী নিজেদের দাবীদাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পাঞ্জাব থেকে কয়েক হাজার কৃষক দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু হরিয়ানা পুলিশ আন্দোলনকারী কৃষকদের পাঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তেই আটকে দেওয়ার পর থেকে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
আর সেই থেকে কৃষকেরা সীমানার সামনে বসেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই কয়েক দিনের মধ্যে কৃষকেরা বার বার সীমানা পেরিয়ে দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ২০২০ সালের কৃষক আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে আগে থেকেই হরিয়ানা সীমানাগুলিতে নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলা হয়। ফলে কৃষকেরা তা ভাঙতে ব্যর্থ হন। পুলিশ কৃষকদের আটকাতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই কৃষকদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দু’সপ্তাহ দিল্লিতে প্রবেশের সিঙ্ঘু ও টিকরি সীমানা বন্ধ ছিল।
সেখানে বড়ো বড়ো বোল্ডার, বালির বস্তা, পেরেক পুঁতে রাখা হয়। তবে ২৫ শে ফেব্রুয়ারী সেই দুই সীমানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতেই ভারী বোল্ডার ক্রেন দিয়ে সরানো হয়েছে। এমনকি হরিয়ানার সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার পুনরায় সংযোগ চালু করা হয়েছে। অন্য দিকে, ইতিমধ্যে কয়েক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষকদের সমস্যা দূর করতে তাদের সাথে বৈঠক করেছে। তবে এখনো অবধি কোনো সমাধানসূত্র বার হয়নি। কৃষকেরা সরকারের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন।