বিচারে ইতি টেনে রাজনীতিতে প্রবেশ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরী ছেড়ে রাজনীতিতে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন দলে যাচ্ছেন, তা প্রথমে জানাননি। শুধু তৃণমূলে যোগ দেবেন না জানিয়েছিলেন। ফলে কোন দলে যোগ দেবেন তা নিয়ে জল্পনাও তুঙ্গে ছিল। বিভিন্ন সূত্রের খবর, সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্তফা দেওয়ার পর বিজেপিতে যোগ দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। যে কেন্দ্র এখন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর পুত্র তথা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীর।

চলতি মাসেই দেশে লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণা হতে চলেছে। আর আগামী মঙ্গলবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন। তবে এখনো বিজেপি এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি। বিজেপির কোনো নেতাকেও প্রকাশ্যে কিছু বলতে শোনা যায়নি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ইস্তফা গৃহীত হলেই প্রতিক্রিয়া দেব।’’


বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজনীতিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো নিষ্ঠাবান মানুষকে দরকার, সে তিনি যে দলেই যোগ দিন না কেন। আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপিই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বাভাবিক পছন্দ হওয়া উচিত।’’ কিন্তু তাঁর তমলুক থেকে দাঁড়ানোর বিষয় অনেকে বলছেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সাড়া জাগানো নির্দেশ দিয়েছেন। বঞ্চিত চাকরীপ্রার্থীদের মনে আশা-ভরসা জুগিয়েছেন। তাঁরাও বিচার পাবেন।


আর ঘটনাচক্রে, ওই চাকরীপ্রার্থীদের একটি বিরাট অংশ পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাসিন্দা। তাই এই দিকটি নজরে রেখেই বিজেপি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তমলুক থেকে দাঁড় করানোর কথা ভেবে থাকতে পারে।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তমলুকের বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন, এমন সম্ভাবনা জোরালো হওয়ার পর থেকেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর দেওয়া বিভিন্ন নির্দেশ বা রায়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে শাসক তৃণমূল। দলের মুখপাত্র অরূপ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘শিশির অধিকারী নিজেই স্বীকার করে নিলেন যে, তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থীর নাম অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর পরেও কিন্তু আমাদের বিশ্বাস করতে হবে, জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের বিগত দিনের সব রায় নিরপেক্ষ ছিল, পক্ষপাতদুষ্ট ছিল না। ফোনের বার্তালাপের ক্লিপ সমাজমাধ্যমের সূত্রে প্রাপ্ত।


এছাড়া বিজেপি দাবী করে যে, তারা শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দিল্লি থেকে প্রার্থী ঘোষণার আগেই শুভেন্দু অধিকারীর বাবা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম বলে দিলেন। যাঁর নাম বললেন তিনি এখনও বিচারপতির চেয়ারে রয়েছেন। এতে বিজেপির ওই দাবির আর সারবত্তা থাকে না। এর থেকেই স্পষ্ট, বিচারপতি হিসাবে তিনি যা রায় দিয়েছিলেন, সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। আর বিজেপির কী দশা, এক জন খাতায়কলমে তৃণমূলের সাংসদ (শিশির, কাঁথির সাংসদ) জেপি নড্ডার আগে বিজেপির প্রার্থীর নাম বলে দিচ্ছেন।’’

রবিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের পর তৃণমূলের কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ভেবে ভাল লাগছে যে, আমি যে কথা ওঁকে বলেছিলাম, উনি সেই মর্মেই এগোচ্ছেন। ফলে এটাও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে ওঁর যে রায় বা পর্যবেক্ষণ ছিল, তা রাজনৈতিক।’’ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও বলেন, ‘‘আমরা বার বার বলতাম, ওই চেয়ারে বসে উনি যে মন্তব্যগুলো করতেন, তা করা যায় না। এ বার যদি উনি কোনও রাজনৈতিক দলে যান, তা হলে রাজনৈতিক লড়াই হবে৷ আমি জানি না, শুভেন্দু কতটা পারবে৷ কিন্তু আমার কাছে তমলুকে তৃণমূলই জিতবে৷ তাই উনি জাস্টিসের সিট ছেড়ে দিয়ে যদি হেরে যান, এটাতে আমাদেরও খুব খারাপ লাগবে।’’

DISCLAIMER: This channel does not promote any violent, Harmful or illegal activities. All content provided by this channel is meant for an educational purpose only.

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031