নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ঝাড়খণ্ডঃ সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে আথিক তছরুপের অভিযোগে আজ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন রাজ্যপালের কাছে রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা জমা দেন। প্রসঙ্গত, হেমন্ত সোরেনের নাম জমি জালিয়াতি মামলায় জড়িয়েছে। আর গত কয়েকদিন ধরে ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) তাঁকে এই নিয়ে খুঁজছিল।
এরমধ্যে বিজেপির তরফে দাবী করা হয়, ‘‘রবিবার রাতেরবেলা থেকে হেমন্ত সোরেন নিখোঁজ হয়েছেন। ওই দিন শেষ বার হেমন্ত সোরেনকে দিল্লির বিমানবন্দরে নামতে দেখা গিয়েছিল।’’ এরপর ইডি তাঁর দিল্লির বাড়িতে গিয়েও পায়নি। এমনকি দিল্লির ঝাড়খণ্ড ভবনেও ছিলেন না। অতঃপর ইডি হেমন্ত সোরেনের ফাঁকা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দু’টি বিএমডব্লিউ গাড়ি ও নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে। তারপর প্রায় ত্রিশ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পরে রাঁচীতে নিজের বাড়ির সামনেই দেখা যায়।
আর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে বসেই নিজের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) বিধায়কদের সাথে বৈঠক করেন। এদিকে এই সবের মধ্যেই হেমন্ত সোরেন ইডির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে তফশিলি জাতি-উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে মামলা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ইডি ফাঁকা বাড়ি থেকে যে বিএমডব্লিউ গাড়ি এবং নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। যার মালিক তিনি নন। কিন্তু ইডি তাঁকে মালিক ঠাওরাচ্ছে, যা আদতে ভুল তথ্য।’’ অন্যদিকে, হেমন্তে সোরেনের গ্রেফতারের ঘটনায় দলের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
আগে থেকে তাই বিক্ষোভের আশঙ্কা করে ইডি অতিরিক্ত নিরাপত্তার আর্জি জানায়। ইতিমধ্যেই রাজ্যে বিশৃঙ্খলার আঁচ পেয়ে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের অর্থ দপ্তরের সচীব এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন। আর রাঁচির কাঁকে রোডে হেমন্ত সোরেনের বাড়ির চারপাশে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, পরিবহন মন্ত্রী চম্পাই সোরেন রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। ঝাড়খণ্ডকে আলাদা রাজ্য করার দাবীতে যে আন্দোলন হয়েছিল, তাতে চম্পাই সোরেনের বড়ো ভূমিকা ছিল।
এর আগে ঝাড়খণ্ডের আরেক মুখ্যমন্ত্রী তথা হেমন্ত সোরেনের বাবা শিবু সোরেন সাংসদ কেনাবেচার মতো দুর্নীতির মামলাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। এছাড়া ২০০৬ সালে একটি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। তখন অবশ্য শিবু সোরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় তাঁকে ইস্তফা দিয়ে জেলে যেতে হয়েছিল।
ঝাড়খণ্ডের ইতিহাসে হেমন্ত সোরেন তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে গ্রেফতার হলেন। তবে প্রথম হেমন্ত সোরেনকেই গ্রেফতার হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়। এর আগে দেশে বিহারের লালুপ্রসাদ যাদব ও তামিলনাড়ুর জয় জয়ললিতা গ্রেফতারীর জন্য মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছাড়তে হয়েছিল।