মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ পানীয় জল সরবরাহের লাইনে ফাটল ধরায় গত ৪৮ ঘণ্টা থেকে বারাসাত, মধ্যমগ্রাম ও নিউ ব্যারাকপুরের একাংশে তীব্র জলসঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। প্রশাসনের তরফে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। পুর এলাকার কিছু জায়গায় জল এলেও তা এতই সরু হয়ে পড়ছে যে, সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, টিটাগড় থেকে গঙ্গার অপরিশোধিত জল পাইপলাইনের মাধ্যমে মধ্যমগ্রাম পুরসভার অধীনস্থ পানিহারায় জল শোধন প্লান্টে যায়। সেখানে প্রক্রিয়াকরণের পরে তিন পুর এলাকায় পরিশ্রুত জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু মুড়াগাছা উড়ালপুল সংলগ্ন এলাকায় মাটির নীচে জলের পাইপলাইনে হঠাৎই ফাটল দেখা যাওয়ায় অপরিশোধিত জল আনার প্রক্রিয়াটাই বিঘ্নিত হয়েছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
কেএমডিএ, সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির প্রতিনিধি সহ প্রশাসনের অন্য দপ্তরের আধিকারিকেরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। পুরসভাগুলি নিজেদের এলাকায় ট্যাঙ্কার ভর্তি করে বাড়ি-বাড়ি জল পাঠিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করলেও পুরোপুরি চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এলাকাবাসীরা বড়ো বড়ো জার কিনে জলের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
প্রশাসনের একাংশের অনুমান, মুড়াগাছা উড়ালপুলের রিটেনিং ওয়ালের একাংশের চাপ ওই পাইপলাইনের উপরে পড়ে যাওয়ায় দু’টি পাইপলাইনের মধ্যবর্তী জয়েন্ট খুলে যায়। তবে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাবে ফাটলের কারণ জানানো হয়নি। কিন্তু আগামী দিনে মুড়াগাছার ওই রাস্তায় উড়ালপুলের কারণে এমন বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কায় বিকল্প জলের লাইনের দাবী করা হচ্ছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
উল্লেখ্য, পুর এলাকার বেশীরভাগ জায়গায় গঙ্গার পরিশ্রুত জল আসার জন্য অনেকদিন থেকে ভূগর্ভস্থ জল তোলা বন্ধ থাকায় পুরসভাগুলি এই বিপর্যয়ের কারণে জল সরবরাহ করতে নাজেহাল হচ্ছে। বারাসাতের পুর চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘দশ থেকে বারোটি ওয়ার্ডে এই বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে। গত দু’দিন ধরে অশ্বিনীপল্লী, দক্ষিণপাড়া, বর্মা কলোনী, হৃদয়পুর, মালঞ্চ এবং প্রসাদপুরের মতো বিস্তীর্ণ এলাকার লোকজন জলের অভাবে ভুগছেন।
আমরা ভূগর্ভস্থ জল ট্যাঙ্কারে ভর্তি করে বাড়ি বাড়ি পাঠাচ্ছি। কেএমডিএর সাথেও যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’’ মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, ‘‘জরুরী ভিত্তিতে ফাটল সারাইয়ের কাজ চলছে। সরকারী প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। মধ্যমগ্রাম পুরসভার একাংশে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন যেখানে চালানো সম্ভব সেখানে চালানো হয়েছে।
তবে যেখানে যেখানে একেবারেই জল আসছে না, সেখানে গত দু’দিন ধরে পুরসভার তরফ থেকে জলের গাড়ি পাঠানো হয়েছে।’’ এর পাশাপাশি নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবীর সাহা জানিয়েছেন, ‘‘অসুবিধা হওয়া সত্ত্বেও অনেক জায়গাতেই জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।’’