অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্যাপনে ব্যানার, এলইডি স্ক্রিন সহ কোনো জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নেই কেন? গত ৫ ই জুন মানস ভুঁইয়া নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা আয়াকনভেনশন সেন্টারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আয়োজিত পরিবেশ দিবস উদ্যাপনের মঞ্চে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
মঞ্চে দাঁড়িয়েই পরিবেশ দপ্তরের প্রধান সচিব রোশনী সেনের কাছ থেকে এই নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন। ওই ঘটনার দশ দিন পরে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানস ভুঁইয়াকে পরিবেশ দপ্তরের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলেন। আর নিজের হাতে পরিবেশ দপ্তর রেখেছেন। এই বদলের নেপথ্যে ছবি কাণ্ড রয়েছে কি না, আপাতত তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এছাড়াও শোনা যাচ্ছে, সম্প্রতি বেআইনী বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জন্য শাসকদলকে একাধিক বার কাঠগড়ায় উঠতে হয়েছে। তা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভও তৈরী হয়েছে। রাজ্য-রাজনীতি উত্তপ্ত হয়েছে। তাই ক্ষোভ প্রশমনে তাঁর হাত থেকে দপ্তর নেওয়া হল কি না, সেই তত্ত্বও শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া গত মে মাসে তৎকালীন মন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুরে অন্য একটি সরকারী অনুষ্ঠানে গিয়ে সেখানেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখতে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন। যা নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করেছিলেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখা বাধ্যতামূলক কি না, তা নিয়ে তরজাও শুরু হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ছবি নিয়ে বিতর্ক চাইছেন না। তাই পরিবেশ দপ্তর কেড়ে দলের অন্যদেরও বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবেশ দপ্তরের কর্তাদের একাংশের অনুমান, মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নেই কেন, এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করাটা বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানান, ‘‘এমনিতেই ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে পরিবেশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। এই সরকারের কাছে পরিবেশ দপ্তর গিনিপিগের মতো। সব সময়েই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এই পরিবর্তন তারই প্রমাণ। তবে মানস ভুইঁয়া চেষ্টায় দপ্তরের কাজে গতি এসেছিল।’’
আরেকজন পরিবেশবিজ্ঞানী বলেন, ‘‘কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পরিবেশ দপ্তরের কাজ বুঝতে সময় লাগবে। সেখানে ক্রমাগত মন্ত্রী পরিবর্তন করলে দপ্তরের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।’’ যদিও পরিবেশকর্মীদের সংগঠন সবুজ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেছেন, ‘‘বিশ্ব পরিবেশ দিবসের পরই পরিবেশমন্ত্রীর রদবদল হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’