রায়া দাসঃ কলকাতাঃ গতকাল মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পিপিআর বা রিভিউ (পোস্ট পাবলিকেশন রিভিউ) ও পিপিই অথবা স্ক্রুটিনির (পোস্ট পাবলিকেশন স্ক্রুটিনি) ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এই ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে শিক্ষকরা মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষায় খাতা দেখার ক্ষেত্রে বিস্তর গাফিলতি করেছেন।
মাধ্যমিকের রিভিউ এবং স্ক্রুটিনির ফলাফলে যেখানে মাত্র তিন শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীর নম্বর বেড়েছে সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায় ২০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীর নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতার রিভিউ ও স্ক্রুটিনির ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, স্ক্রুটিনিতে ৮ হাজার ৩৬১ টি এবং রিভিউয়ে ৮৫ হাজার ২২৭ টি আবেদন জমা পড়েছিল। মূল্যায়ন হয়েছে ১৮ হাজার ৫৭৬ জনের। তাদের নম্বরে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে সংসদের চোখে। একটি পত্রে তো ৫৮ নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সর্বাধিক।
অর্থাৎ প্রায় ১৯.৮৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীর নম্বর বৃদ্ধি হওয়ায় শিক্ষকদের খাতা দেখার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিকে দেড় হাজার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন বাকি রয়ে যাওয়ায় সংসদ কর্তারা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। সংসদ জেনেছে, খাতা দেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শিক্ষক নম্বর যোগ করতে ভুল করেছিলেন।
খাতা দেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছু জায়গায় নম্বর দিতেও ভুল করেছিলেন। তাই এই ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে তাই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চাইছে। তাই সংসদ খাতা দেখায় গাফিলতির অভিযোগে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকদের শোকজ করে জানতে চাওয়া হবে কেন খাতা দেখায় এমন সমস্যা হয়েছে। সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য স্ক্রুটিনি ও রিভিউয়ের ফলপ্রকাশের পরেই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে শিক্ষকদের চিহ্নিত করে শোকজ করা হবে, সেই পদ্ধতি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানান, ‘‘সংসদ এই শোকজ নোটিশ কিভাবে দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। কারণ সংসদের ইতিহাসে শোকজের ঘটনা নজিরবিহীন। ফলে শোকজ করার ক্ষেত্রে শিক্ষক-সমাজের ওপর যাতে কোনো ভাবেই চাপ তৈরী না হয়, তাও সংসদকে দেখতে হবে।’’