নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মালদাঃ এবার দীপাবলিতে বিপদ ডেকে এনেছে কার্বাইড গান। ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে অনেতেই এবার এই গান ব্যবহার করেছে। এতে ব্যবহৃত হওয়া রাসায়নিকের প্রভাবেই নষ্ট হচ্ছে চোখ। দেশের একাধিক জায়গা থেকে এমন খবর সামনে এসেছে। এ রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। কার্বাইড গান ফেটে দৃষ্টি হারাতে বসেছে মালদহের ৯ কিশোর ও তরুণ।

উৎসবের মরশুমে দেশ জুড়ে বিপদ ডেকে এনেছে বাড়িতে তৈরি এই কার্বাইড গান। যেভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে কিশোররা, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে চক্ষু চিকিৎসকদের মধ্যেও। মালদহের চক্ষু চিকিৎসক দেবদাস মুখোপাধ্যায়ের কাছে এমন পাঁচজনের চিকিৎসা চলছে। আর এক চিকিৎসক মলয় সরকারের কাছে একজন এবং চিকিৎসক সৌরভ পোদ্দারের কাছে আরও দু’জনের চিকিৎসা চলছে। এক চিকিৎসকের দাবি, মালদহের মানিকচকের মহানন্দটোলার এক শিশুকে চিকিৎসার জন্য ওই পরিবারের লোকজন নিয়ে গিয়েছেন নেপালে।

এই ঘটনায় চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া অফথালমোলজিক্যাল সোসাইটি’-র তরফে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এবং জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে একটি জরুরি আবেদন জারি করা হয়েছে। কার্বাইড-ভিত্তিক এবং ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরক আতশবাজি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। মালদার শহরের বিশিষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেবদাস মুখোপাধ্যায়ের কাছে গাজোলের ১৩ বছর বয়সী আকাশ বিশ্বাস চোখ দেখাতে গিয়েছিল। চোখে আঘাত লাগল, জানতে চাইলে ওই কিশোর বলে, ‘আমি ইউটিউব দেখে বাড়িতে থাকা খালি জলের বোতল আর কার্বাইড দিয়ে ওই বন্দুক বানিয়েছিলাম। গ্যাসের ওভেন ধরানোর লাইটার দিয়ে আগুন জ্বালাতেই বিস্ফোরণ হয়ে যায় হাতে। আমার চোখে আঘাত লাগে। বাড়িতে এসে জল দিয়ে বার বার চোখ ধুয়েছি। কিন্তু এখনও ঠিকভাবে কিছু দেখতে পাচ্ছি না।’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
ছোট্ট কিশোরের কাছ থেকে এ কথা শুনে রীতিমতো বিরক্ত চিকিৎসক। তাঁর কথায়, ইউটিউবে অনেক ভাল ভাল জিনিসও দেখা যায়, কিন্তু জেন এক্স সে সব দেখে না। হবিবপুর থেকে একইভাবে ২০ বছরের এক তরুণ গিয়েছিল মালদহ শহরের মকদুমপুরে। কিশোর বিশ্বাস নামে ওই তরুণ জানান, তাদের গ্রামেরই এক ছেলে সেই কার্বাইড গান তৈরি করেছিল, তাতে আগুন ধরে যায়নেভানোর সময় হাত লেগে যায় কার্বাইডে। ভুলবশত সেই হাত চোখে লাগে। তারপর থেকেই সমস্যা বেড়ে যায়। এখন চোখে ঝাপসা দেখছে চোখে। চিকিৎসক সৌগত পোদ্দার জানান, এভাবেই গাজোলের ভৈরব রায় নামে এক শিশুর রেটিনার ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। নর্মাল স্যালাইন দিয়ে ক্রমাগত ওয়াশ করার পর এখন অবজার্ভেশনে রাখা হয়েছে।













