চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ মাধ্যমিকে পরীক্ষা না হওয়ার জেরে বেশী নম্বর প্রাপকের সংখ্যা এক লাফে প্রায় ১০ লক্ষ। যা একেবারেই নজিরবিহীন। গত বছরের তুলনায় কম নম্বর পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর মাধ্যমিকে ৪২ হাজার ৮৫৫ জন পরীক্ষার্থী ৯০ থেকে ১০০ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে। ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৬৬ জন পরীক্ষার্থী ৮০ থেকে ৮৯ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে। ৮ লক্ষ ১০ হাজার ৫৫৯ জন পরীক্ষার্থী ৬০ থেকে ৭৯ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে। প্রায় ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থী ৬০ শতাংশের উপরেই নম্বর পেয়েছে। ৯৪ হাজার ২৫৭ জন পরীক্ষার্থী ৪৫ থেকে ৫৯ শতাংশ এর মধ্যে নম্বর পেয়েছে। ৯ হাজার ৭৩৫ জন পরীক্ষার্থী ৩৫ থেকে ৪৪ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে। ৩ হাজার ২৭৭ জন পরীক্ষার্থী ২৫ থেকে ৩৪ শতাংশ এর মধ্যে নম্বর পেয়েছে।
আজ শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, “চলতি বছর সর্বোচ্চ ৭০০ নম্বরের মধ্যে সর্বাধিক ৬৯৭ নম্বর উঠেছে। ৭৯ জন পরীক্ষার্থী এই নম্বর পেয়েছেন। এছাড়া যে সকল মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী মাধ্যমিক ফল প্রকাশে সন্তুষ্ট হবে না তারা ফের পরীক্ষায় বসতে পারবে। সেক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া ওই পরীক্ষার নম্বরকে চূড়ান্ত নম্বর বলে বিবেচনা করা হবে”।
এর পাশাপাশি ৪৯ টি ক্যাম্প অফিস তৈরী করে বিদ্যালয়গুলিতে মার্কশিট ও অ্ডযামিট কার্ড প্রদান করা হবে। নবম-দশম শ্রেণীর ইন্টার্নাল ফর্মতিভ এভালুয়েশন এই দুটির অনুপাতে চলতি বছর ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমিকের নম্বর দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেছেন, ”চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক। জীবনের প্রথম এতো বড়ো একটা পরীক্ষাকে হাস্যকর পর্যায়ে নামিয়ে আনা হল। প্রকৃত মেধা তার মর্যাদা পেল না। ১০০% পাশ করিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিদ্যালয় কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে অস্বীকার করা হল। যার মধ্য দিয়ে সরকার অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাকে উত্সাহিত করা হলো। অতিমারীর সুযোগে শিক্ষাব্যবস্থাকে ছেলেখেলার পর্যায়ে নামিয়ে আনা হল। আগামী দিনে শিক্ষার মান বজায় রাখতে পঠন-পাঠন এবং পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সচল রাখা যায় কিভাবে তা এখন থেকে আগামীর পরিকল্পনা গ্রহণ করার দাবী জানাচ্ছি”।