সাইক্লোন তাউতের রোষে নিখোঁজ ২ যুবক
স্নেহাশীষ মুখার্জিঃ নদীয়াঃ আরব সাগরে ওঠা সাইক্লোন ‘তাউত’এর পর থেকেই নিখোঁজ নদীয়া জেলার দুই যুবক। একজন কোতোয়ালি থানার জাহাঙ্গীরপুরের বাসিন্দা জাহাজ কর্মী শ্রীবাস ঘোষ। অপর একজন তেহট্টের বাঘাখালির ২৮ বছরের যুবক সজল বিশ্বাস।
উভয়ের পরিবার পুলিশের কাছে একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছে। শনিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ শ্রীবাস ও সজলের কোনো খোঁজ দিতে পারেনি। এমনকি শ্রীবাস যে জাহাজ কোম্পানীতে কাজ করতেন সেই জাহাজ কর্তৃপক্ষও শ্রীবাসের কোনো খোঁজ দিতে পারেনি।
সূত্রের খবর, বছর চারেক আগে শ্রীবাস জাহাজে ক্যাটারিংয়ের কাজে মুম্বইয়ে যান। প্রতি মাসে নিয়ম করে বাড়িতে টাকা পাঠাতেন। প্রতি ছ’-সাত মাস অন্তর বাড়িও আসতেন। গত ১৫ ই মে অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে শেষবারের মতো শ্রীবাস ফোন করেছিলেন। এরপর থেকে পরিবারের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেননি। পরিবারের তরফ থেকে ফোন করলে ফোনেও পাওয়া যায়নি।
শ্রীবাসবাবুর মা আরাধনাদেবী জানান, “একদিন ফোন করে বলেছিল জোর বাতাস বইছে এখানকার পরিস্থিতি খুব খারাপ। জাহাজে জল ঢুকে গিয়েছে। তারপর থেকে আর কথা হয়নি। ফোন করেও পাওয়া যায়নি। কিন্তু শ্রীবাস এক পিসতুতো দিদিকে ফোনে জানিয়েছিল, বাড়িতে কিছু না জানতে। আমাদের ক্যাপ্টেন জলে ঝাঁপ মারতে বলেছে। সকাল থেকে ফোন করে কোনো উত্তর মেলেনি।
শ্রীবাস বেহালার বাসিন্দা পিসতুতো বোন রাখী কীর্তনীয়াকে শেষ যে মেসেজ করেছিলেন তাতে লিখেছিল, “অবস্থা খুব খারাপ। কী যে হবে? জাহাজে আগুন ধরে গিয়েছে। জল ঢুকে গিয়েছে। ঝড় থামছে না। জাহাজের সকলেই খুবই চিন্তিত”।
অন্যদিকে সজলও সাইক্লোন ‘তাউত’ এর জাহাজডুবিতে নিখোঁজ। সজল মুম্বাইয়ের ওএনজিসির এক কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তারপরই ১৮ ই মে মায়ের সাথে ভিডিও কলে শেষ কথা হয়।
ওই যুবকের মা ছন্দা বিশ্বাস বলেছেন, “সেইদিন ভিডিও কল করেছিল। সেদিনের ঝড়-বৃষ্টির দৃশ্য দেখিয়েছিল। এরপর থেকে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি”।
তবে ২২ শে মে মুম্বাই থেকে বাড়িতে ফোন আসে। জানানো হয় পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে মুম্বাইয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যেতে। সেই মোতাবেক রবিবার সজলের বাবা মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। যদিও এখনো পর্যন্ত পরিবারকে ঠিক কি ঘটেছে জানানো হয়নি।
এই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ জানিয়েছিল, “বিষয়টি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাজ্যস্তরে জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি খোঁজখবর নিয়েও দেখা হচ্ছে”।