মেলায় গিয়ে বিদ্যুৎয়ের তার ছিঁড়ে মর্মান্তিক পরিণতি হলো ২ জনের

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে মেলায় অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের নাম ২৩ বছর বয়সী সুজিত দাস ও ৬৫ বছর বয়সী সুধীর পাইক। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বিজেপির অভিযোগ, ওই ২ জনকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। আগামী সোমবার খেজুরি বনধের ডাক দিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

জানা গিয়েছে, খেজুরি থানার ভাঙনমারি এলাকায় মেলা চলছে। গতকাল রাতে সেখানে অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন সুজিৎ এবং সুধীর। পুলিশের বক্তব্য, মেলায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ওই ২ জন। তাঁদের স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিজেপি কর্মীরা খেজুরি থানা ঘেরাও করেন। তাঁদের অভিযোগ, ২ জনকেই খুন করা হয়েছে।

স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা পবিত্র দাস বলেন, “বলা হচ্ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তাহলে মৃতের কপালে রক্ত এল কোথা থেকে? মুখে রক্ত এল কীভাবে? প্যান্ট-জামা ছিঁড়ল কীভাবে? পরিকল্পিতভাবে ২ জনকে খুন করা হয়েছে।


মৃত সুজিৎ দাসের বাবা শশাঙ্ক দাস বলেন, “আমার ছেলে অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিল। ভোরে খবর পাই, আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অনুষ্ঠানস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে আমার বাড়ি। গোটা খেজুরি ঘটনার খবর জেনে গেল। আর আমাকে তখন জানানো হয়।” অন্যদিকে, মৃত সুধীর পাইকের ছেলে সুভাষ পাইক বলেন, “আমার বাবা অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি, বাবা মারা গিয়েছেন। অভিযুক্তদের শাস্তি চাই।” সুধীর পাইকের নাতনি যমুনা মিতা অভিযোগ করেন, “আমার দাদুকে খুন করা হয়েছে। দাদুর প্যান্ট ছেঁড়া ছিল।”

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি অভিযোগ করেন, “হিন্দু বলে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্তরা কুখ্যাত দুষ্কৃতী। অভিযুক্তরা খুন করে পালিয়েছে।” শুভেন্দু বলেন, এক অভিযুক্তকে এর আগে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ডেকেছিল এনআইএ। সোমবার খেজুরি বনধের ডাক দেন তিনি। তবে বনধের আওতা থেকে দিঘাগামী রাস্তাকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।


বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না। ময়নীতদন্তের রিপোর্ট সামনে এলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।”

কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাস বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে যে চিকিৎসক দেখেছেন, তিনি বলেছেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এই মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।” অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930