বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে আগামীকাল ১২ ঘণ্টা বনধ
স্নেহাশীষ মুখার্জিঃ নদীয়াঃ দুই বিজেপি কর্মীর মৃতদেহকে ঘিরে নদীয়ার শান্তিপুরে চাঞ্চল্য ছড়ালো। আজ শান্তিপুরের মেথিডাঙ্গা এলাকায় তাদের রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় বিজেপি তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে। কিন্তু শান্তিপুরের তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করছে। এর প্রতিবাদে আগামীকাল বিজেপি ১২ ঘন্টা শান্তিপুরে বনধ ডেকেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসীরা শান্তিপুর থানার মেথিডাঙ্গা এলাকার একটা কলা বাগানের ভেতর দুই যুবকের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। পরে শান্তিপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। তবে প্রথমে মৃত দুই যুবকের নাম ও পরিচয় পুলিশ জানতে পারেনি।
পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খুনের ঘটনা চাউর হতেই মৃত যুবকদের পরিবার থানায় যোগাযোগ করে। খুন হওয়া একজন যুবক নিশ্চিন্তপুর হাউস কলোনীর বাসিন্দা দীপঙ্কর বিশ্বাস। এবং অন্যজন প্রতাপ বর্মন যার বাড়ি শান্তিপুর নৃরসিংহপুর বর্মন পাড়াতে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর বেলা থেকে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। এরপর থেকে ফোনে তাদের যোগাযোগ করা যায়নি, বাড়িতেও আসেনি। সকালবেলায় শোনা যায় কলাবাগানে দু’জন খুন হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে লাশ দেখতে পাওয়া যায়নি। আর থানায় গিয়ে বডিও পাওয়া যায়নি। থানার অফিসার মোবাইলে ছবি দেখালে মোবাইলেই ওদের শনাক্ত করা হয়।
পরিবার সূত্রের দাবী যে, “পাড়ায় বিজেপির একজন মেম্বার থাকেন। এরা তার সঙ্গেই বিজেপির মিটিং মিছিল করত। আর তারা বিজেপির সক্রিয় কর্মী সাংসদ ছিল”।
ঘটনা জানাজানি হতেই শান্তিপুরের বিজেপি পদপ্রার্থী জগন্নাথ সরকার তাদের বাড়িতে যান। পরিবারকে নিয়ে জগন্নাথ সরকার অভিযোগ করতে আসেন। বিজেপির তরফ থেকে শান্তিপুর ডাকঘর মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিজেপি কর্মীর খুনের প্রতিবাদে শুক্রবার শান্তিপুর শহর বিজেপির পক্ষ থেকে ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়।
শান্তিপুর বিজেপি পদপ্রার্থী জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ, “প্রতিদিন শাসকদল তৃণমূল পশ্চিমবাংলায় বিজেপি কর্মীদের খুন করে পরিচয় গোপন করার প্রয়াস চালাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন শাসক দলকে সম্পূর্ণ ভাবে এই কাজে মদদ দিচ্ছে। বিজেপি কর্মীদের পরিচয় গোপন করে বডি পরিবারকে দেখিয়ে শনাক্ত না করিয়েই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই বডি পরিবারের কেউ দাবী করতে না পারে”।
শান্তিপুর সহ তৃণমূল সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র বলেছেন, “দুই যুবকের খুন হওয়ার ঘটনায় তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই। এই খুন কোনো রাজনৈতিক খুন নয় কারণ এরা কেউ রাজনীতি করতো না। এরা খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ ছিল। এখানে বিজেপির যে সাংসদ তথা শান্তিপুরের প্রার্থী জগন্নাথ সরকার রাজনীতির ফায়দা তুলতে এই কাজ করছে ও তৃণমূলকে বদনাম করছে। আমি হলফ করে বলতে পারি তৃণমূলের সঙ্গে এই খুনের কোনো সম্পর্ক নেই”।