অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ সংঘর্ষের ঘটনার পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও থমথমে রয়েছে বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড। এলাকায় চলছে পুলিশ টহল। সোমবার তল্লাশি অভিযানে ওই এলাকায় তৃণমূলের একটি দলীয় অফিস থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। শাসকদলের একটি শিবিরের অভিযোগ, ওই দলীয় অফিসটির দেখভাল করেন দলের নেতা রাজু নস্কর, যিনি আবার তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে আর এক প্রভাবশালী স্থানীয় নেতা অলক দাসের বিরোধী বলে পরিচিত। তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার এই দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এই ঘটনায় রবিবারই ২১ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রাতের দিকে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ধৃতদের আদালতে পেশ করে পুলিশ।
অলকের অনুগামীদের অভিযোগ, দলীয় অফিসে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করে রাখেন রাজু। রবিবারও তাঁরা রাজুর অফিস থেকে গুলি ছোড়ার অভিযোগ করেছিলেন। গুলিকাণ্ডে এক জন আহতও হন। রাজু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন। সোমবারও অলক শিবিরের দাবি, ওই দলীয় অফিস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাই প্রমাণ করে রাজু হিংসাত্মক কার্যকলাপে যুক্ত।
বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি তৃণমূলের অলকানন্দা দাসের সঙ্গে দলের রাজুর মধ্যে ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা সুবিদিত। এই অলকানন্দার বাবাই হলেন অলক। রবিবার রাজু অভিযোগ করেছিলেন, সকালে এক দল দুষ্কৃতী গিয়ে তাঁর অফিস, গাড়ি ভাঙচুর করে। এমনকি তাঁর অনুগামীদেরও মারধর করার অভিযোগ ওঠে বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। অলক পাল্টা অভিযোগ করে জানান, তাঁর অফিসের পাশে শনিবার রাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে সকালে কয়েকজন রাজুর অফিসে গেলে ভিতর থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। গুলি চালানোর ফলে পিন্টু দাস নামে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হন। আক্রান্তের অভিযোগ, রাজুর অফিসের ভিতর থেকেই গুলি ছোড়া হয়েছে। এলাকা দখল নিয়েই এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে অভিযোগ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজু অবশ্য বলেছিলেন, “কোনো বিজেপি, তৃণমূলের লড়াই নেই। প্রশাসনকে বলা হয়েছে। প্রশাসন দেখবে। আমাকে কেন দোষারোপ করা হচ্ছে? কিছু লোক এলাকা দখল করার জন্য তৃণমূলের ঝান্ডা ব্যবহার করে এ সব করছে।”