নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মুর্শিদাবাদঃ গতকাল রাতেরবেলা মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে আচমকা দীপায়ন তরফদার নামে এক জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র গুঁড়িয়ে সিসিটিভি সহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে এক জন রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে যে, ৩ রা জুলাই বহরমপুর শহরে লালদিঘির বাসিন্দা দেবলীনা মুখোপাধ্যায় প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে দীপায়ন তরফদারের অধীনে হাসপাতালে ভর্তি হলে সিজারিয়ান ডেলিভারীর পর মা-শিশু দু’জনে সুস্থ ছিলেন। কিন্তু গত ৬ ই জুলাই দেবলীনা দেবীর প্যানক্রিয়াটিস ধরা পড়ে।
বেশ কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতাল ঘুরে শেষমেশ এক মাস যাবৎ নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করে বাড়ি ফেরেন। তবে বাড়ি ফিরে আসার পর আরো কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় নতুন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে দেখা যায় ওই মহিলার হৃদ্যন্ত্রের ৭০ শতাংশ বিকল হয়ে গিয়েছে।
এরপর দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও দেবলীনা দেবীর পরিবার তা করেনি। আর চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু যাওয়ার পথে বিশাখাপত্তনমের কাছে শারীরিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে তড়িঘড়ি একটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়।
দু’দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পরে মৃত্যু হয়। এদিকে দীপায়ন তরফদার অভিযোগ করেন যে, ‘‘এই মৃত্যুর সাথে সিজার অথবা ভুল চিকিৎসার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে ওই রোগিণীর মৃত্যুর কারণ হিসাবে তাকেই দায়ী করে ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ৩০ লক্ষ টাকা চাওয়া হলে তা দিতে অস্বীকার করায় এই হামলা চালানো হয়।’’
দীপায়ন তরফদার এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি চিকিৎসক সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের’ মুর্শিদাবাদ শাখাতেও অভিযোগ করেছেন। যদিও রোগী পরিবারে পক্ষ থেকে এই ভাঙচুরের ঘটনার কথা অস্বীকার করছেন।
দেবলীনা দেবীর পরিবার দাবী করেছেন যে, ‘‘সিজারের আগে সমস্ত রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তখন কোনোরকম সমস্যা ছিল না। পরবর্তী কালে সবটাই চিকিৎসকের ভুলে হয়েছে। এছাড়া ভাঙচুরের ঘটনায় কে কিংবা কারা যুক্ত জানি নেই। ওই চিকিৎসক আমাদের উপরে চাপ তৈরী করার জন্য মিথ্যে গল্প বলছেন।’’