নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হুগলীঃ হুগলীর চুঁচুড়ার নন্দীপাড়া মনসাতলা এলাকায় দিনের পর দিন ৪০ বছর বয়সী অরিন্দম ভাদুড়ি নামে এক ব্যক্তি নিজেকে সেনার পরিচয় দিয়ে চাকরী দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্র চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষমেশ চুঁচুড়া থানার পুলিশের জালে জড়িয়ে জড়িয়ে পড়লো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অরিন্দমবাবু এলাকায় মদ্যপ ও প্রতারক হিসেবেই পরিচিত। তার এই মদের নেশার কারণে স্ত্রী-মেয়েও কাছে থাকে না। তবে টাকা না থাকায় মদ কিনে উঠতে পারছিলেন না। সেই কারণেই নতুন করে প্রতারণার ছক কষেন। এই ছকে নিজেকে সেনাকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়।
এরপর কয়েকশো বেকার যুবক-যুবতীকে ১৫০ টাকা দিয়ে ফর্মপূরণ করতে দেয়। আর টাকাটা একটি কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোডের মাধ্যমে পাঠাতে হত। শিল্পা দাস নামে চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার এক যুবতীও সেই ফর্মপূরণ করেছিলেন। তারপর অরিন্দমবাবু শিল্পাকে একটা কাজ দিয়েছিলেন।
কথা ছিল, ১৮ হাজার টাকার বিনিময়ে সে এমন বেকারদের ফর্ম পূরণ করাবেন। এদের মধ্যে যোগ্যরা ‘অরিন্দম এন্টারপ্রাইজের’ মাধ্যমে অনলাইনে জিনিস কেনাবেচার কাজ করবেন। শিল্পা গত কয়েক মাসে প্রায় কয়েশো জনের থেকে ফর্মপূরণ করান। কিন্তু কাউকেই চাকরী দেওয়া হয়নি।
ফলে আবেদনকারীরা শিল্পার উপর চাপ দিতে থাকেন। শিল্পা জানায়, ‘‘কিউআর কোড নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তা খতিয়ে দেখতে দেখা যায় সেই টাকা একটি মদের দোকানের নামে যাচ্ছে। তখনই বুঝতে পারে যে প্রতারিত হয়েছে। আর তার মাধ্যমে প্রচুর মানুষকে প্রতারণা করা হচ্ছে।’’
এরপরই গতকাল শিল্পা অরিন্দমকে চুঁচুড়া লঞ্চ ঘাটের সামনে সেনার পোশাকে আসতে বলে জানিয়েছে যে, ‘‘অরিন্দমবাবুর সাথে অনেক চাকরীপ্রার্থী দেখা করতে চাইছে।’’ তারপর অরিন্দমবাবু আসতেই তাকে টেনে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর প্রতারিতদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অরিন্দমবাবুকে গ্রেফতার করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অরিন্দম্রবাবুর পকেট থেকে একটি মদের বোতল পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, মদের জোগানের জন্য এই প্রতারণার ছক কষা হয়েছিল। এই ঘটনায় পুলিশের তরফ থেকে সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া আজ অভিযুক্ত অরিন্দমবাবুকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হবে।