নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মুর্শিদাবাদঃ গতকাল চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মুর্শিদাবাদের গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরী হয়।
সূত্রের ভিত্তিতে জানা গেছে, মুর্শিদাবাদের নওদা থানার বালি এলাকার দুই ভাই আল্লারেখা শেখ ও মহিরুল শেখ গোরুর ব্যবসা করেন। তাই ব্যবসার কাজের জন্য মোটরবাইকে পলাশিপাড়ার সাহেবনগর পোতারপাড়া এলাকায় যাচ্ছিলেন। এরপর সাহেবনগরের কাছে টেংরা মারি সেতু পার করার পর এক লরির সঙ্গে তাদের বাইকের সংঘর্ষ হতেই আল্লারেখা এবং মহিরুল গুরুতর আহত হন।
তারপর দু’জনকে প্রীতিময়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা না করেই তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেন। কিন্তু সেখানে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে বলতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের সাথে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়।
ফলে আল্লারেখা বিনা চিকিৎসায় মারা যান। এরপরেই তড়িঘড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে মহিরুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বহরমপুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। তবে সেখানেও কর্তব্যরত চিকিৎসক চিকিৎসা না করে কলকাতায় স্থানান্তরিত করে দেন।
এদিকে আল্লারেখার মৃত্যুর কথা পরিবারের সদস্যরা জানার পরই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ শুরু করেন। এমনকি বিভিন্ন ওয়ার্ডের দরজা, একাধিক শয্যা, দু’টি অ্যাম্বুলেন্স সহ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ভাঙচুর করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একাধিক চিকিৎসক ও কর্মীদের উপর হামলা শুরু করেন।
ফলে ক্ষ্ণিকের জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী এবং এক জন-দু’জন রোগীরা পর্যন্ত ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছেড়ে পালিয়ে যান। অবশেষে তেহট্ট থানার পুলিশ উত্তাল পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
তেহট্ট দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রণদাপ্রসাদ বসু স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, “আমরা মৃত ব্যক্তির জন্য শোকাহত। কিন্তু সরকারী সম্পত্তি এভাবে নষ্ট করা উচিত হয়নি। এলাকার লোক স্বাস্থ্যকর্মীদের মারের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। সরকারী সম্পত্তি নষ্ট করার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বেশ কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে চিকিৎসকরা ফিরে এসে রোগী দেখতে শুরু করতে থাকেন।