পিঙ্কি পালঃ দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাঃ মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান উপলক্ষ্যে বহু পুণ্যার্থী বাংলা তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় জমিয়েছেন। আজ সকাল ৬টা ৫৮ মিনিট থেকে পুণ্যস্নান শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবার সকালবেলা অবধি চলবে। অনেকে ইতিমধ্যেই স্নান সেরে ফেলেছেন।
এদিন সকালবেলা বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার দলীয় কর্মী ও অনুগামীদের নিয়ে গঙ্গাসাগরের এক নম্বর ঘাটে এসে স্নান সেরেছেন। এছাড়া মেলায় আসার রাস্তা জুড়ে শুধুই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘‘দলের তরফে একাধিক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সম্বলিত তোরণ গেট তৈরীর আবেদন জানানো হলেও স্থানীয় বিডিও সেই অনুমতি দেননি। তাই চল্লিশ কোটি মানুষ এলেও এই মেলা জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাবে না, কারণ এখানে দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি ঠাঁই পায় না!’’
তবে গঙ্গাসাগর মেলায় প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। পুলিশ-প্রশাসন ভিড় সামাল দিতে তৎপর রয়েছে। কিন্তু পূর্ণকুম্ভের কারণে অন্য বারের তুলনায় এবার গঙ্গাসাগরে ভিড় কম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ১ লা জানুয়ারী থেকে ১৩ ই জানুয়ারী পর্যন্ত প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষ গঙ্গাসাগর মেলায় এসেছেন। আগামীকাল সকালবেলাও তীর্থযাত্রীরা পুণ্যস্নানের জন্য রবিবার থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাগরদ্বীপে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। পুণ্যার্থীদের কথা মাথায় রেখে মেলা কমিটির তরফে একাধিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
মেলার সময় পর্যাপ্ত চিকিৎসক, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স, ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স এবং প্যারামেডিকেল কর্মীর বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে। মেলাপ্রাঙ্গণে বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া, তামিল, তেলুগু, মারাঠী ও ইংরেজি ভাষায় ঘোষণার ব্যবস্থাও থাকছে। সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে দু’হাজারের বেশী বাস থাকছে। জলপথে একশোটি লঞ্চ, বত্রিশটি ভেসেল এবং ন’টি বার্জ থাকছে। বিভিন্ন জায়গায় বারোটি অস্থায়ী জেটিও তৈরী করা হয়েছে।
পাশাপাশি, এবার পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগরে এসে স্নান করলে সার্টিফিকেট পাবেন। এই শংসাপত্রের নামকরণ ‘বন্ধন’ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় লেখা এই সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, নির্দিষ্ট কিউআর কোড স্ক্যান করলেই টয়লেট, পথনির্দেশিকা, পার্কিং, বাস, লঞ্চ, ফেরি পরিষেবা সহ মেলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে। শিশু এবং বয়স্কদের জন্য ই-পরিচয়পত্রেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে পুণ্যার্থীর সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দেওয়া থাকবে।